কাঠের পৃষ্ঠতলের প্রাকৃতিক অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে –জানাচ্ছে গবেষণা

কাঠের পৃষ্ঠতলের প্রাকৃতিক অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে –জানাচ্ছে গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ অক্টোবর, ২০২৪
জানাচ্ছে গবেষণা

ঠান্ডা-গরমের চক্রাকার আবহাওয়ায় এক দিকে জীবাণুর বৃদ্ধি ঘটে, অন্য দিকে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সরাসরি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে হতোদ্যম হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরকে আক্রমণ করে। ২০১৯ সালের করোনা ভাইরাসের কথা আমরা সবাই জানি। কোভিড মহামারীর সময় আমরা সকলেই শুনেছি যে করোনাভাইরাসের মতো বিভিন্ন ভাইরাস দূষিত পৃষ্ঠতলের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল সব পৃষ্ঠতল থেকেই কি সংক্রমণের ঝুঁকি একই মাত্রায় থাকে? এসিএস অ্যাপ্লাইড ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড ইন্টারফেসেস নামের জার্নালে বলা হয়েছে কাঠের প্রাকৃতিক অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার ফলে কাঠের পৃষ্ঠে ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে – এবং সংক্রামকতা হ্রাস করতে কিছু প্রজাতির গাছের কাঠ অন্য গাছের কাঠের চেয়ে বেশি কার্যকর।
করোনাভাইরাসের মতো এনভেলপড বা আবরণযুক্ত ভাইরাস পৃষ্ঠতলে পাঁচ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে; অন্যান্য আবরণহীন ভাইরাস যেমন সাধারণ সর্দি-কাশির কারণ এন্টারোভাইরাস কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন পৃষ্ঠতলে বেঁচে থাকতে পারে, এমনকি যখন পৃষ্ঠতলগুলো জীবাণুমুক্ত করা হয় তখনও। আমরা পূর্বে গবেষণায় দেখেছি কাঠের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই গবেষণায় পাইন, বার্চ, ওক, ইউক্যালিপটাস, স্প্রুস এবং অ্যাল্ডার এই ছধরনের কাঠ নিয়ে দেখা হয়েছে আবরণযুক্ত ও আবরণহীন ভাইরাস কত সময় ধরে এইসব কাঠের পৃষ্ঠে সংক্রামক থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে পাইন, স্প্রুস, বার্চ এবং অ্যাল্ডার-এই ধরনের কাষ্ঠল উদ্ভিদ এক ঘণ্টার মধ্যে করোনভাইরাসের সংক্রামক ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে যেখানে ইউক্যালিপটাস এবং ওকের ক্ষেত্রে দু ঘন্টা সময় প্রয়োজন। পাইনে অ্যান্টিভাইরাল কার্যকলাপের সূচনা খুব দ্রুত ঘটে- মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে। স্প্রুসের ক্ষেত্রে ১০ মিনিটের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ করার ক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে। অন্যান্য আবরণহীন এন্টারোভাইরাসের ক্ষেত্রে পাইন, বার্চ এবং ইউক্যালিপটাস চার ঘন্টা পরে ভাইরাসের সংক্রামকতা হ্রাস করে এবং অ্যাল্ডারের ক্ষেত্রে কোনও অ্যান্টিভাইরাল প্রভাব দেখা যায়নি। গবেষণার তথ্যের উপর ভিত্তি করে, গবেষকরা এই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে নির্দিষ্ট কাষ্ঠল উদ্ভিদের পৃষ্ঠের রাসায়নিক গঠন প্রাথমিকভাবে এর অ্যান্টিভাইরাল কার্যকারিতার জন্য দায়ী।