কামান দাগলেও মশা উড়বে না

কামান দাগলেও মশা উড়বে না

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

হাজার রকম মশা মারা তেলেও কিছু নাকি হওয়ার নেই। এমনই কেরামতি লুকনো মশাদের আস্তিনে।

মানুষের গায়ের গন্ধ মশাদের কাছে অদ্ভুত ককটেল। এই গন্ধ মশার শুঁড়ে থাকা গ্রাহক কোষগুলোকে উদ্দীপ্ত করে থাকে। এই বিশেষ কোষ কেটে বাদ দিয়ে বিজ্ঞানীরা হতবাক – তারপরেও মশা দমেনি। অর্থাৎ, কোনও ফন্দি ফিকিরেই মশাকে প্রতিহত করা অসম্ভব।

সেল জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা রাতের ঘুম কেড়ে নিতে যথেষ্ট। এই জার্নালের মুখ্য লেখকদের মধ্যে মার্গো হের, রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিজ্ঞানী। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে প্রাণীরা গন্ধ চিনতে পারে সেসব কোনও নিয়মই নাকি খাটছে না মশাদের ক্ষেত্রে।

অলফ্যাক্টরি নিউরোন ঘ্রাণ বুঝতে সাহায্য করে, বেশিরভাগ প্রাণীদেহে তা’ই। এই ধরণের একটা নিউরোন সাধারনত একটা বিশেষ গন্ধকেই শনাক্ত করতে পারে। এমন একেকটা নিউরোনে অনেক গ্রাহক থাকে। এদের মাধ্যমেই প্রাণীরা গন্ধ পায়। লেসলি ভোশাল বলছেন, মানুষের এইরকম একটা নির্দিষ্ট গন্ধের একটা গ্রাহকও যদি বাদ পড়ে, তাহলে ঐ বিশেষ গন্ধ মানুষ আর পাবে না। শ্রীমতী ভোশাল যুক্ত আছেন হাওয়ার্ড হিউজেস মেডিক্যাল ইন্সটিটিউট আর রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে। তিনি এই গবেষণাপত্রের আরেকজন মুখ্য লেখক। তিনি আরও জানিয়েছেন, মশাদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম খাটে না। কারণ একটা দুটো গ্রাহক কোষ কেটে বাদ দিলে তাতেও কোনও ফারাক পড়ে না। মশা তাড়াবার সব চেষ্টাই তাই বৃথা।

জার্নালের অন্যতম লেখক, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেগ ইয়োঙ্গার বলছেন, মশাদের মগজে নাকি মানুষের গন্ধ ফর্মুলার মতো জমা আছে।

গবেষক শ্রীমতী ভোশাল ভাবেন মশার মতো অন্য পোকামাকড়ের শরীরেও নাকি একই ধাঁচের কেরামতি। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিস্টোফার পটারের গবেষক দলও মাছির নিউরোনে এই ধরণের ব্যবস্থা লক্ষ্য করেছেন।

মেগ ইয়োঙ্গারের দল ভবিষ্যতে আরও তলিয়ে দেখতে চাইবেন কীভাবে ঐ গ্রাহকগুলো কাজ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − 6 =