কারখানার দূষণে খালের জল লাল, প্রতিবাদে পরিবেশকর্মীরা

কারখানার দূষণে খালের জল লাল, প্রতিবাদে পরিবেশকর্মীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা।
Posted on ১ জুলাই, ২০২২

উলবেড়িয়ার চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে গেলেই দেখা যাবে এক ভয়াবহ দৃশ্য। গ্রামের গুজারপুর খালের রং সম্পূর্ণ লাল হয়ে গিয়েছে! কৃষি জমিকেও মুড়ে ফেলেছে লাল অধঃক্ষেপের আস্তরণ। রাসায়নিক দূষণের জেরেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সেখানকার বাস্তুতন্ত্র। নাজেহাল স্থানীয়রাও। পরিবেশকর্মী তথা মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির সম্পাদক জয়িতা কুণ্ডুর বক্তব্য, “একসময় গুজারপুর খালে বহু মৎস্যজীবী মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আজ এই খালে কোনও প্রাণের অস্তিত্ব নেই। এমনকী, এই খালের দূষিত জল নালা কেটে চাষের জমিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে বিঘের পর বিঘে চাষের জমি নষ্ঠ হয়ে গেছে সম্পূর্ণভাবে।” এই দূষণে মূল অভিযুক্ত উলবেড়িয়ার মাধবপুর গ্রামে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে অবস্থিত পিভিসি পাইপ তৈরির কারখানা। জয়িতার আরও অভিযোগ, “কোনওরকম পরিশোধন না করে দূষিত বর্জ্য জল সরাসরি গুজারপুর খালে নিষ্কাশন করছে এই কারখানা। পাশাপাশি নালা কেটে সেই জল ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে চাষের ক্ষেতেও।”এই দূষণের জেরে বিগত কয়েক বছর ধরেই মহাসংকটে উলবেড়িয়ার স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীরা। দূষণের জেরে বন্ধ হয়েছে চাষাবাদ, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিঘের পর বিঘে জমির ফসল। একইভাবে খালের দূষিত জল থেকে হারিয়ে গিয়েছে মাছ। গবাদি পশুরা দূষণের জলই খাচ্ছে বলে তারাও নানারকমের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এমনকি স্থানীয়দের অভিযোগ, এই জল খেয়ে প্রাণও হারিয়েছে বেশ কিছু প্রাণী। জয়িতা জানালেন, এর আগে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তবে তাতে লাভ হয়নি। তাই এবার আন্দোলনে নামলেন তাঁরা। গত রবিবার মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির উদ্যোগেই আয়োজিত হয় প্রতিবাদমূলক পদযাত্রা। সেইসঙ্গে কারখানা ঘিরে মানবপ্রাচীর গড়ে তোলেন পরিবেশকর্মীরা। বিশেষ করে মহিলা এবং খুদে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতোই।