বর্তমান বিশ্বে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এক আতঙ্কের নাম। সম্প্রতি গ্লাসগোয় হওয়া ক্লাইমেট চেঞ্জিং সামিটেও কার্বন কমানো নিয়ে নানা মুনির নানা মত শোনা গিয়েছে। ইউরোপে, আইসল্যান্ডের মত দু’একটা দেশে কার্বন-ক্যাপচার মেশিনের ব্যবহারও দেখা যাচ্ছে। তাও, সমস্যা মেটার কথা নয়। কারণ, বাতাসে থাকা এই বিষের পরিমাণ অপরিসীম। আর এই পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে মোকাবিলা করার উপযুক্ত প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। সেই অভাব জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চের বিজ্ঞানীরা কিছুটা হলেও দূর করতে চলেছেন। বাতাসকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড মুক্ত করতে এক প্রযুক্তি তৈরি করেছেন এই বিজ্ঞানীরা। যাদের নেতৃত্বে রয়েছেন তাপস কুমার মাঝি নামের এক বাঙালি! তার সহযোগী তিনজন বিজ্ঞানীর মধ্যে রয়েছেন আরও এক বাঙালি, ডাঃ সৌমিত্র বর্মণ।
এদের সৃষ্ট অভিনব প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে মিথেন গ্যাস তৈরি করা যাবে। যার ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ যেমন কমবে, সেভাবে জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে মিথেন ব্যবহারও করা যাবে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ থেকে এদের গবেষণাকে স্বাগতও জানানো হয়েছে।
জার্নাল অফ আমেরিকান কেমিকাল সোসাইটি’র সাম্প্রতিকতম সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। মূলত সৌর-রাসায়নিক পদ্ধতিতে কার্বনের প্রক্রিয়াকরণের ভাবনা থেকেই এই প্রযুক্তির আবিষ্কার তারা করেছেন।
তারা তৈরি করেছেন সিএমপি নামের একটি বিশেষ ধরণের পলিমার। যা নিজেই বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে আলাদা করে নিয়ে সুর্যের আলোর প্রভাবে দু’টি কার্বন-ডাই-অক্সাইড অণুকে জুড়ে তৈরি করবে মিথেন। আর অণুঘটকের কাজ করবে এই পলিমারই। ফলে আর কোনও উপাদানের প্রয়োজন পড়বে না। বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত জানাননি এই প্রযুক্তিকে ঠিক কীভাবে কাজে লাগানো হবে। তবে পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় এই প্রযুক্তির আবিষ্কার গেম-চেঞ্জারের ভূমিকা নিতে পারে!