কার্বন ডাই অক্সাইড যখন প্রাণসঞ্চারক!

কার্বন ডাই অক্সাইড যখন প্রাণসঞ্চারক!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২ অক্টোবর, ২০২১

২০১৯-২০-র অস্ট্রেলিয়া। ভয়ঙ্কর এক বুশফায়ারের সাক্ষী। আবহাওয়াদিদরা আশঙ্কিত হয়ে জানালেন ৭১৫ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশেছে! ধ্বংস হয়েছে ৭৪ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে ইউক্যালিপ্টাস! আমাজনের দাবানলের আগে এই বুশফায়ারকেই বিজ্ঞানীরা বলছেন আধুনিক যুগের ভয়ঙ্করতম প্রাকৃতিক দুর্যোগ। না বলারও তো কারণ ছিল না। জঙ্গলের আগুনে মাটি পুড়েছিল ১ লক্ষ ৮৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে! পাঁচ হাজারেরও বেশি বাড়ি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল আগুনে! মানুষ মারা যাওয়ার পরিসংখ্যান? সরকারি হিসেব অনুযায়ী ৪০০। কিন্তু সংবাদমাধ্যমগুলোকে সূত্র জানিয়েছিল মানুষ মারা যাওয়ার সংখ্যা তার অন্তত তিন গুণ! কত প্রাণী মারা গিয়েছিল তার হিসেব ছিল না! বিলিয়নে চলে যাবে সংখ্যাটা!
কিন্তু সেই ৭১৫ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড কোথায় গেল? সাধারণ মানুষ বলেছিলেন, আমাদের যা ক্ষতি করার সে করে আটলান্টিকে চলে গিয়েছে। গবেষকরা বলছেন তা নয়! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, সেই বিষাক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড আটলান্টিকে চলে গিয়ে হাজার কিলোমিটার দূরে যারা থাকে তাদের মধ্যে নতুনভাবে প্রাণের সঞ্চার করেছে!
গবেষণা জানিয়েছে, আটলান্টিকের দক্ষিণে সমুদ্রের নীচে ফাইটোপ্লাঙ্কটন নামের উদ্ভিদের কুঁড়ি থাকে। ছোট্ট এই কুঁড়িটি কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে নির্গত এরোজল প্রচুর পরিমাণে শুষে নিতে পারে। জলের সঙ্গে এরোজল মিশে ফাইটোপ্লাঙ্কটনের পরিচর্যা হয়। তাতে জলের নিচে অসংখ্য উদ্ভিদ, প্রাণীদের জীবন সুরক্ষিত থাকে। অস্ট্রেলিয়ার বুশফায়ারের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। আটলান্টিকের নীচে থাকা অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবন সুরক্ষিত হয়েছিল। জলের নীচে থাকা প্রাণীরা ও উদ্ভিদেরও অন্যতম খাদ্য ফাইটোপ্লাঙ্কটন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 2 =