কৃতজ্ঞ থাকুন – আয়ু বাড়ান।

কৃতজ্ঞ থাকুন – আয়ু বাড়ান।

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৩ জুলাই, ২০২৪
কৃতজ্ঞ-থাকুন

প্লাস্টিক সার্জারি বা অন্য এনার্জি সাপ্লিমেন্ট নয়। আয়ু বাড়াতে কৃতজ্ঞ থাকুন। একেবারে চিরঞ্জীবীর মতন কাজ করতে পারে, জীবনের প্রতি আপনার এই পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০,০০০ বয়স্ক নার্সদের নিয়ে করা এই নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, কৃতজ্ঞতার মনোভাব আমাদের জীবনের শেষের দিকে কিছু অতিরিক্ত বছর যোগ করতে পারে। গবেষকরা মনে করেন সদর্থক এই দৃষ্টিভঙ্গি শারীরিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের বিশেষজ্ঞ ইং চেন, পূর্বের গবেষণায় দেখছেন, কৃতজ্ঞতা মানসিক অবসাদের ঝুঁকি কম করে। বৃহত্তর সামাজেও মানসিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করে।
২০১৬ সালে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ছিল ৭৯ বছর। অংশগ্রহণকারীদের একটা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়েছিল। তাতে জীবনে তারা যা কিছু পেয়েছেন তার জন্য তারা কতটা কৃতজ্ঞ, এটাই দেখা হয়েছিল। গবেষণায় অংশগ্রহনকারিদের মধ্যে যারা তেমন ভাবে কৃতজ্ঞতার মনোভাব রাখেন না, তাদের ৪,৬০৮ ব্যক্তি পরবর্তী তিন বছরেই মারা গেছেন। কৃতজ্ঞতার মনোভাব রাখা বা সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ব্যাক্তিদের মৃত্যুর সম্ভাবনা কম ছিল তুলনায় ৯%। এই গবেষণায় দেখা গেছে, মনেপ্রাণে কৃতজ্ঞ থাকা ব্যাক্তিরা মৃত্যুর বিভিন্ন কারণকে এড়াতে পেরেছেন সহজে – বিশেষ করে হার্টের রোগকে। যদিও তথ্যগুলোয় অন্যান্য বেশ কিছু কারণ দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তবে এর থেকে বলা যায় না যে সরাসরি ‘কৃতজ্ঞতা’-ই মানুষের আয়ু বাড়ায়। এক্ষেত্রে প্রচুর পরিবর্তনশীল নিয়ন্ত্রক রয়েছে, যেমন আশাবাদী মনোভাব। দেখা গেছে হার্টের উন্নত কর্ম ক্ষমতার সাথে, আশাবাদী মনোভাব সম্পর্কিত।
উল্টোতে, যে সব ব্যক্তিরা বিভিন্ন কারণে সুস্থজীবন যাপন করছেন তাদের কৃতজ্ঞতা অনুভব করার প্রবণতা বেশি। ২০২০ সালে করা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতায় ভুগছেন এমন ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতার অনুভূতি বিশেষ প্রভাব ফেলে না।
চিঠি লিখুন। মনের কথা খুলে বলুন। ছোট থেকে বড় সবরকম বিষয়ে কৃতজ্ঞতা জানান। কৃতজ্ঞতা সামান্য কিছুর জন্যই হোক না কেন, তাতে লাভ আমাদেরই।জীবনে বার্ধক্য আসুক সুস্থভাবে– এ কে না চায় ! বিশেষত জনস্বাস্থ্যের তাগিদে, আরও গবেষণা কৃতজ্ঞতাকে আয়ু বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি মনস্তাত্ত্বিক সম্পদ হিসাবে ব্যাখ্যা করবে, আশা করা যায়। গবেষণাটি জামা সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত হয়েছে।