কিয়া প্রজাতির তোতা পাখি। একমাত্র নিউজিল্যান্ডে পাওয়া যায় এদের। আর তাদেরই একটি পুরুষ তোতা সম্প্রতি চলে এসেছে সংবাদের শিরোনামে। তার নাম ব্রুস। শৈশবে তার ওপরের ঠোঁটটা ভেঙে গিয়েছিল ইঁদুর বা অন্য কোনও আগ্রাসী প্রাণীর আক্রমণে। সেই ব্রুস এক অসাধ্য সাধন করেছে। বহুদিনের বহু পরিশ্রমে, সে তার ওপরের ঠোঁট আবার বানিয়ে ফেলেছে! কৃত্রিম ঠোঁট তৈরি করে ফেলে সকলের নজরে এসেছে সে। প্রাণীবিদরা বলছেন, বহু প্রাণী আছে যারা নিজেদের প্রয়োজনে কৃত্রিম কোনও অঙ্গ বানিয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু কৃত্রিম ঠোঁট? প্রাণীবিদদের মতে ব্রুস যেহেতু এক তোতা পাখি তার একটা ঠোঁট না থাকা মানে, গুরুতর প্রতিবন্ধকতা। সেখানে প্রাণীবিজ্ঞানীরা তার বুদ্ধি ও ধৈর্য্য দেখে শুধু বিস্মিতই নন, অভিভূতও বটে। ঠোঁটই পাখির সমস্ত কিছু। সেখানে ওপরের ঠোঁট না থাকা…
নিউজিল্যান্ডের প্রাণীবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ব্রুস ভাঙা অংশটির সমান দৈর্ঘ্যের একাধিক নুড়ি খুঁজে বের করেছিল। তারপর সেই নুড়িগুলিকে নীচের ঠোঁট আর জিভের মাঝখানে রেখে পালকের সঙ্গে তাকে বেঁধে একদম চিরুনির মতো দেখতে একটা কৃত্রিম ঠোঁট বানিয়ে ফেলেছে! অবিশ্বাস্য এই কাজকে প্রথমে প্রাণীবিদরা আকস্মিক বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু পরে ব্রুসকে দিনের পর দিন পর্যবেক্ষণ করার পর বুঝেছেন পাখিতার এই কাজটা আকস্মিক নয়! প্রচুর পরিশ্রম আর ধৈর্য্যের ফসল ওর এই কাজ। প্রাণীবিদরা জানিয়েছেন প্রথমে, একটা নুড়ি মুখ দিয়ে তোলার পর ব্রুস যখন সেটা ফেলে দিত তারপর আবার সেই নুড়িটাকেই ও নীচের ঠোঁট দিয়ে তুলত, নয়ত আরও একটা ওই সাইজের নুড়ি খুঁজে বেড়াত! কিয়া প্রজাতির টিয়া পাখিরা সাধারণত বুদ্ধিমান হয়। কিন্তু ব্রুস ব্যতিক্রমী। নিউজিল্যান্ডের প্রাণীবিজ্ঞানীরা এখন মেতে আছেন ব্রুসকে নিয়ে!
চিত্র ঋণ – অ্যানিম্যাল মাইন্ডস, অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি।