কৃত্রিম হাতের আঙুল ও হাতের নানান নড়াচড়া রোগী নিজেই করতে পারবে

কৃত্রিম হাতের আঙুল ও হাতের নানান নড়াচড়া রোগী নিজেই করতে পারবে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ জুলাই, ২০২৩

হারানো অঙ্গের ক্ষেত্রে বেশ সাধারণ একটা সমাধান কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন। তবে এই কৃত্রিম অঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন, এটা খুব অল্প নাড়ানো যায়, তাছাড়া এটা থেকে প্রায়শই রোগীর অস্বস্তি হয়। কিন্তু বায়োনিক হাতের ক্ষেত্রে অবশিষ্ট যে বাহুর অংশ থাকে সেই অবশিষ্ট পেশির অংশই এই ধরনের হাত নিয়ন্ত্রণ করে ফলে রোগী নিজে হাতটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। রোগীরা ইচ্ছামত পেশী সংকুচিত করতে পারে, এবং সংকোচনের ফলে উত্পন্ন বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ কৃত্রিম হাতকে কী করতে হবে তা জানায়, যেমন হাত খুলতে হবে বা বন্ধ করতে হবে। তবে কনুইয়ের ওপর থেকে বাহু ব্যবচ্ছেদ হলে যে সমস্যা আসে তা হল খুব বেশি পেশি অবশিষ্ট থাকে না, যা রোবোটিক জয়েন্টকে নির্দেশ দেবে যে হাত দিয়ে কী কী কাজ করতে হবে।
এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য শল্য চিকিৎসক এবং এঞ্জিনিয়ারদের মিলিত দল অবশিষ্ট বাহুর সেন্সর এবং কঙ্কাল ইমপ্লান্ট, কৃত্রিম যন্ত্রের সাথে বৈদ্যুতিক এবং যান্ত্রিকভাবে সংযোগ করিয়ে পুনরায় সাজিয়েছেন। পেরিফেরাল স্নায়ুগুলিকে বিচ্ছিন্ন করে, তাদের নতুনভাবে পেশির সাথে সাজিয়ে জৈবিক পরিবর্ধক হিসাবে ব্যবহৃত করা হয়েছে। এই বায়োনিক প্রস্থেসিস এখন আরও অনেক তথ্য নিয়ে কাজ করতে পারে যাতে ব্যবহারকারী রোগী নিজের ইচ্ছামতো রোবোটিক জয়েন্টকে নানা নির্দেশ দিতে পারে। এই গবেষণাটির নেতৃত্বে ছিলেন সুইডেনের সেন্টার ফর বায়োনিক্স অ্যান্ড পেইন রিসার্চ (সিবিপিআর) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, অস্ট্রেলিয়ার বায়োনিক্স ইনস্টিটিউটের নিউরাল প্রস্থেটিক্স রিসার্চের প্রধান এবং সুইডেনের চালমারস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির বায়োনিক্সের অধ্যাপক।
কৃত্রিম অঙ্গগুলি সাধারণত একটি সকেট দ্বারা শরীরের সাথে সংযুক্ত থাকে যা অবশিষ্ট অঙ্গগুলিকে সংকুচিত করে, ফলে ব্যক্তির একটা অস্বস্তি সৃষ্টি হয়ে, আর এটা খুব একটা স্থিতিশীল ও নয়। বায়োনিক্সে সকেট সংযুক্তির বিকল্প হিসাবে একটি টাইটানিয়াম ইমপ্লান্ট ব্যবহার করা হয়, যা অবশিষ্ট হাড়ের মধ্যে দৃঢ়ভাবে স্থাপিত থাকে — এটি অসিওইন্টেশন নামে পরিচিত। এই ধরনের শরীরের সাথে হাড়ের সাথে প্রস্থেসিসের এই সংযুক্তি আরামদায়ক এবং যান্ত্রিকভাবে দৃঢ় হয়।
অস্ত্রোপচারটি সুইডেনের সাহলগ্রেনস্কা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে হয়েছিল, যেখানে সিবিপিআর অবস্থিত। নিউরোমাসকুলার পুনর্গঠন পদ্ধতিটি ডাঃ পাওলো সাসু দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, যিনি স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় সম্পাদিত প্রথম হাত প্রতিস্থাপনেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গবেষকের দল এই বিষয়ে আরো উন্নতির জন্য কাজ করে চলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 20 =