কৃষ্ণসাগরে কোণঠাসা ডলফিনরা, সৌজন্যে সামরিক সক্রিয়তা

কৃষ্ণসাগরে কোণঠাসা ডলফিনরা, সৌজন্যে সামরিক সক্রিয়তা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ মার্চ, ২০২৩

গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকেই অগণিত পুরুষ, মহিলা আর শিশুর মৃত্যু ঘটেছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি কেবলমাত্র মানুষেরই হয়নি। আঁচ পড়েছে কৃষ্ণসাগরের স্থায়ী বাসিন্দা ডলফিন আর শুশুকদের গায়েও। কেটাসিয়ান প্রজাতির এইসব সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যুর সংখ্যাটা কয়েকশো ছাড়িয়েছে।
২০২২ সালের বসন্ত আর গ্রীষ্মে ডলফিন, শুশুক আর তিমিদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে সমুদ্রতীরে লটকে পড়ে থাকার ঘটনা অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে গেছে অনেকটাই। বিজ্ঞানীরা একটা প্রতিবেদনে জানিয়েছে এমনই ভয়ানক তথ্য। রিপোর্টটা এসেছে অ্যাকোব্যামস সংস্থার তরফ থেকে। এই প্রতিষ্ঠান কৃষ্ণসাগর, ভূমধ্যসাগর আর সংলগ্ন আটলান্টিক মহাসাগরে কেটাসিয়ান প্রজাতির সংরক্ষণের জন্যে কাজ করে।
কৃষ্ণসাগরের সীমানা জুড়ে বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, তুরস্ক আর ইউক্রেনের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত ডলফিন আর শুশুকদের মৃত্যুর সংখ্যা ৭০০-র বেশি। এমনটাই জানিয়েছেন এরিখ হোইট। উনি ইংল্যান্ডের একটা সংরক্ষণ সংস্থার গবেষক যারা মূলত তিমি আর ডলফিনদের ব্যাপারে সচেতন।
ইউক্রেনের তুজলা এস্তুয়ারিস ন্যাশানাল নেচার পার্কের পরিচালক ইভান রুসেভ বলছেন, চলতি বছরের প্রথমার্ধে অনেক ডলফিনকেই দেখা গিয়েছে যারা তাদের চামড়ার পোড়া দাগ সৈকতে ধুয়ে নিচ্ছে। সেগুলো বোম বা মাইন বিস্ফোরণের ফলেই সৃষ্ট, এমনই ধারনা। আবার কোনও কোনও শুশুকে সমুদ্রের পাড়ে দিশাহীন হয়ে ঘুরতে দেখা যায়।
কৃষ্ণসাগরের যে অংশে যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব পড়েছে, সেখানে তিন বিশেষ প্রাণীর অস্তিত্ব সঙ্কটে আছে বলে অনেক আগেই ঘোষণা করেছে ইন্টারন্যাশানাল ইউনিয়ন ফর কন্সারভেশন অফ নেচার বা সংক্ষেপে আইইউসিএন। ঐ তিনটে প্রাণী হচ্ছে, কৃষ্ণসাগরের সাধারণ ডলফিন আর বটলনোজ ডলফিন এবং বন্দরের শুশুক। যুদ্ধের তাপে তাদের বেঁচে থাকা বা টিকে থাকার সম্ভাবনা দিনে দিনে আরও ম্রিয়মাণ হয়ে আসছে।