২০১৮-য় কেরলে বিধ্বংসী বন্যা হয়েছিল। তারপর সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল ‘অদ্ভূত’ মাছের ছবিতে। কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী আক্রমণাত্মক মাছ নিয়ে পড়াশুনো করেন স্মির্থি রাজ। তিনি তার অন্য গবেষক বন্ধুদের নিয়ে নামলেন গবেষণায়। অ্যাকোয়াটিক ইকোসিস্টেম হেলথ ও ম্যানেজমেন্ট পত্রিকায় সম্প্রতি তার পর্যবেক্ষণ নিয়ে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে। কেরলে ৪৪টি নদী ও ৫৩টি রিজার্ভার নিয়ে গবেষণা করেছেন রাজ। জানিয়েছেন ৩০টি প্রজাতির ‘বিদেশি’ ও বিরল মাছ ২০১৮-র বন্যায় ঢুকে পড়েছে। যাকে সোশ্যাল মিডিয়া বলছে ‘অদ্ভূত’ মাছের সন্ধান পাওয়া গেল। রাজের বক্তব্য, “বিদেশি মাছের প্রবেশে অ্যাকোয়াকালচার উন্নত হয়। মাছের ব্যবসার বৃদ্ধি হয়, মশার জৈব নিয়ন্ত্রণ ভাল হয়। কিন্তু এই বিদেশি মাছগুলো যদি আবার সমুদ্রে চলে জায় তখন, রাজের পর্যবেক্ষণে, নষ্ট হয়ে যায় স্থানীয় জীববৈচিত্র্য এবং ইকোসিস্টেম।
অনেক রকমের বিদেশি মাছ দেখা গিয়েছে ওই বন্যার ফলে। রাজ জানাচ্ছেন এদের মধ্যে মোজাম্বিক তেলাপিয়া একট উল্লেখযোগ্য নাম। আফ্রিকার মাছ এটি। ৩৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ১ কেজির ওপর ওজন হয়! তারপর দেখা মিলেছে সাধারণ কার্প! ২৫০০ বছর ধরে এই আলঙ্কারিক মাছের (মাছের অ্যাকিউরিয়ামে যে মাছ রাখা হয়) চর্চা হচ্ছে পৃথিবী জুড়ে। প্রত্যেকটা দেশে এই মাছ পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা বলেন, এই আক্রমণাত্মক মাছ সবসময় জলের গুণগত মান খারাপ করে দেয়। আর একটি বিরল মাছের সন্ধান পেয়েছেন রাজ। তার নাম আরাপিমা গিগাস। আকারে বিশাল বলে তাকে মেগা-ফিশও বলা হয়। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকা আর একজন, রাজীব রাঘবনের সতর্কবাণী, “বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রতিফলনে এরকম ঘটনা আরও ঘটবে, যেখানে বিরল বিদেশি মাছেরা ঢুকে পড়বে রাজ্যের নদীগুলোতে। কিন্তু সরকারকে নজর দিতে হবে যাতে মাছ ব্যবসায়ীরা, মূলত যারা অ্যাকিউরিয়ামে রাখা মাছের ব্যবসা করেন তাদের ওপর। কারণ অবৈধভাবে বিরল বিদেশি মাছের চোরাকারবার কিন্তু বহুদিন ধরেই হয়। এই ঘটনা সেই ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুবিধে করে দেবে।”