বিশ্ব উষ্ণায়নে বাড়ছে সমুদ্রের গড় উষ্ণতা, আর তাতেই ক্রমশ বাড়ছে প্রবালের বিপদ। উষ্ণ জলস্রোত প্রবালকে ফিকে রঙা পাথরকুচিতে পরিণত করে ফেলতে পারে। ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে অতি উষ্ণতার কারণে প্রবাল থেকে এক ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। এই ঘটনার পারিভাষিক শব্দ ব্লিচিং। এই ব্লিচিংই প্রবালের মৃত্যুর কারণ। ২০১৬ থেকে ‘নর্দান গ্রেট বেরিয়ার রিফ’-এ অগভীর সমুদ্রের প্রবাল প্রাচীর কমেছে ২৯%।
ব্লিচিং এর হাত থেকে প্রবালকে বাঁচানোর সম্ভাব্য এক প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। প্রবাল আসলে একক সত্তাধারী কোনো জীব নয়, বরং প্রবাল প্রাচীর বহুবচনেই এর ব্যবহার শ্রেয়। এর কেন্দ্রে সালোকসংশ্লেষের প্রক্রিয়া চলে যা শক্তির মূল উৎস। এই শক্তিই প্রবালকীট ও প্রবালে অবস্থানকারী পরজীবি ব্যকটেরিয়া ইত্যাদিকে পুষ্টি পেতে সহায়তা করে। সৌদি আরবের ‘কিং আবদুল্লা ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র সমুদ্র বাস্তুতন্ত্রবিদ রাকেল পেইসোটো গবেষণাগারে দেখেন, প্রবালে বসবাসকারী একধরনের পরজীবি ‘প্রবায়োটিক্স’ তাপের হাত থেকে প্রবালকে বাঁচাতে সক্ষম হচ্ছে। তবে এই গবেষণা অ্যাকোরিয়ামে ২৬ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োগ করে করা হয়। তাতে দেখা যায়, যে প্রবালগুলিকে স্যালাইন দিয়ে উষ্ণতা প্রয়োগ করা হয়েছিল সেগুলোর চল্লিশ শতাংশই মারা গেছে। আর প্রবায়োটিক্স প্রয়োগ করা প্রবালগুলির ১০০% ই রক্ষা পেয়েছে। যদিও এ তথ্য এখনো অজানা যে, কেমন ভাবে প্রোবায়োটিক্স কাজ করছে। তবে ক্রমবর্ধমান বিশ্ব উষ্ণায়নের সময়কালে সমুদ্র তলদেশের প্রবাল প্রাচীরে প্রবায়োটিক্স আদৌ কার্যকরী হবে কিনা সে নিয়ে সংশয় রয়েছে বিজ্ঞানী মহলেই। যদিও ‘উত্তর কারোলিনা উইলমিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে’র অণুজীব বিশেষজ্ঞ ব্লাক উশজিমা বলছেন, প্রাথমিক স্তরে এ আবিষ্কার অবিশ্বাস্য সম্ভাবনাময়।