সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত দুটি গবেষণায় বলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার কোশের মধ্যে ছত্রাকের DNA-র অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এও বলা হচ্ছে ছত্রাক ও ক্যান্সারের মধ্যে একটা যোগসূত্র থাকতে পারে, তবে তার এখনও কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামি ভাট, এই গবেষণার সাথে যুক্ত ছিলেন না, তিনি বলেছেন, কিছু দুর্লভ ছত্রাকের অস্তিত্ব টিউমার কোশে পাওয়া গেছে , যা বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরেছে যেমন- ছত্রাকগুলি জীবিত না মৃত, কীভাবে ছত্রাক ওই স্থানে গেল, তাদের ওই কোশে থাকার কী গুরুত্ব?
দুটি গবেষণাতে নানা ধরনের ক্যান্সারের কোশ, মানুষের সারা শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে নেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের ওয়েজম্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এবং সান দিয়াগো, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ৩৫ ধরনের ক্যান্সারের কোশে ছত্রাকের DNA সনাক্ত করেছেন।
রব নাইট, UCSD -র একজন মাইক্রোবায়োম গবেষক এবং মাইক্রোনোমার (এখানে মাক্রোবিয়াল জৈব-মার্কারের সাহায্যে ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রেস বিবৃতি দিয়েছেন যে শরীরে মুখ, পেট, ত্বকে ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের স্বাস্থ্যকর একটা সহাবস্থান দেখা যায়।
ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় এবং কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একদল গবেষকও, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে ছত্রাকের সন্ধান পেয়েছেন। তারা ক্যান্ডিডা প্রজাতির ছত্রাক ও গ্যাস্ট্রোইনস্টেটিনাল ক্যান্সারের মধ্যে একটা জোট দেখতে পেয়েছেন। তারা গবেষণাপত্রে লিখেছেন, বিভিন্ন টিউমার স্যাম্পেলে ক্যান্ডিডা প্রজাতি দেখা যায়, আর টিউমারের সাথে এই ক্যান্ডিডা প্রজাতি পাওয়া গেলে, তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম।
STAT কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভাট বলেছেন, ক্যান্সার প্যাথোলজিতে ছত্রাকের ভূমিকা এখনও স্পষ্ট নয়। যেমন- হতে পারে ক্যান্সার আক্রান্ত কোশের ইমিউনিটি কম হওয়ায় ছত্রাক তার সুবিধা নিচ্ছে । আবার হয়তো, কোন ইমিউন কোশ ছত্রাককে ধ্বংস করেছে, আর টিউমারের জায়গায় তার DNA –কে সনাক্ত করা গেছে। অথবা এও হতে পারে, আমাদের চারদিকে লক্ষ কোটি আণবিক জীব ঘুরছে, তারা যেকোন সময়ে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে।
তবে, দুটি গবেষণাপত্রই দাবী করেছে, ক্যান্সার প্যাথোলজিতে এই টিউমারের ছত্রাক জৈবমার্কার হিসেবে নতুন পূর্বাভাস বা লক্ষণ নির্ণয় করতে কাজে লাগবে। ওয়েজম্যান ইনস্টিটিউটের র্যাভিড স্ট্রসম্যান, এই গবেষকদের একজন এবং মাইক্রোনোমার সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইসারি বোর্ডের সদস্য, বিভিন্ন ক্যান্সার ও মাক্রোবায়োম বায়োটেক কোম্পানির পরামর্শদাতা STAT কে জানিয়েছেন, ক্যন্সারের গবেষকরা যেন মাইক্রোবায়োম তাদের গবেষণার একটা বিষয় করেন।
স্ট্রসম্যান বলেছেন, ক্যান্সার নিয়ে আমাদের আরো অনেক কিছু জানতে হবে, আণবিক জীব –ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাসের আঙ্গিকে ক্যান্সারকে দেখতে হবে। যেহেতু টিউমারে এইসব আণবিক জীবদের সকলকে দেখা যায়, তাই তার মতে টিউমারে এদের প্রভাব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।