কয়লা বন্ধের প্রস্তাবে নিরব ধনী দেশগুলো!

কয়লা বন্ধের প্রস্তাবে নিরব ধনী দেশগুলো!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৫ নভেম্বর, ২০২১

গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণে কয়লা হল বৃহত্তম একক অবদানকারী। ২০২০-তে বিশ্বজোড়া কোভিডের ঝড় এবং লকডাউনের ফলে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ৫.৪ শতাংশ কমে গিয়েছিল তার আগের বছরের তুলনায়। এর মূল কারণ ছিল বিশ্বজুড়ে কারখানা বন্ধ থাকা, আরও গুরুত্বপূর্ণ, পৃথিবীর বৃহত্তর কয়লা খনিগুলোর বন্ধ থাকা। এবং বর্তমানে একাধিক গবেষণা আরও জানিয়েছে, এই মুহুর্তে পৃথিবী জুড়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ মহামারীর আগের সময়ে ফিরে গিয়েছে! পরিসংখ্যানবিদরা বলছেন, গতবছর যে পরিমাণ কমে গিয়েছিল, সেটা এই বছরের মধ্যে ৪.৯ শতাংশ বেড়ে যাবে! আর এখানে কয়লা-নিসৃত কার্বনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
গ্লাসগোয় ক্লাইমেট চেঞ্জিং কনফারেন্সে (সিওপি-২৬) স্বাভাবিকভাবেই আলোচনা হয়েছে কয়লার ব্যবহারকে কীভাবে বাতিল করা যায় সে নিয়ে। না হলে বিশ্বের তাপমাত্রাকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামানো যাবে না! সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়ে দিয়েছে, তাপমাত্রা যদি আরও বেড়ে যায় তাহলে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক মহাদুর্যোগ কিন্তু আরও বেড়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহ, প্রাকৃতিক ধ্বস-সবই বার বার হতে শুরু করবে! মানুষকে প্রস্তুতিও নেওয়ার সময় দেবে না। আর তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ দূষণের বৃদ্ধি আর দূষণ বৃদ্ধির অন্যতম উপাদান কয়লার ব্যবহার।
কয়লা বাতিলের সমর্থনে সম্মতি দিল ২৩টি দেশ। কিন্তু নীরব ধনী দেশগুলো! চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং অষ্ট্রেলিয়া। সম্মিলিতভাবে এই চারটি দেশে ব্যবহ্রত কয়লার পরিমাণ পৃথিবীর মোট কয়লার অর্ধেক! পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং চিলির মত নতুন দেশ সই করেছে কয়লা বাতিলের সমর্থনে।
যদিও শেষপর্যন্ত, আমেরিকা, ভারত, চিন জানিয়েছে তারাও চায় কয়লার ব্যবহার ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিতে। ২০৩০ বা ২০৪০-এর মধ্যে এই কাজ তারা সম্পূর্ণ করবে বলে জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক এনার্জি এজেন্সির দেওয়া রিপোর্ট অবশ্য পরিষ্কার। যদি কয়লা, মিথেনের মত উপাদানের ব্যবহার না বন্ধ করতে পারে দেশগুলো তাহলে এই দশকের শেষে কিন্তু পৃথিবীর তাপমাত্রা ১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে যাবে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 − two =