খাবার মোড়কে থাকা ৩৬০০ রাসায়নিক মানুষের শরীরে

খাবার মোড়কে থাকা ৩৬০০ রাসায়নিক মানুষের শরীরে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
খাবার মোড়কে

খাদ্য প্যাকেজিং বা প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত ৩৬০০ টারও বেশি রাসায়নিক মানুষের শরীরে পাওয়া গেছে, যার মধ্যে কিছু রাসায়নিক স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। জুরিখের এনজিও ফুড প্যাকেজিং ফোরাম ফাউন্ডেশনের গবেষক বির্গিট গিউকে বলেছেন, এই রাসায়নিকগুলোর মধ্যে প্রায় ১০০টা মানব স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগজনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই রাসায়নিকগুলোর মধ্যে কিছু ভালোভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছে যেমন পিএফএএস এবং বিসফেনল-এ। এই দুটোই এখন নানা দেশে নিষেধাজ্ঞার আওতায়।
অন্য রাসায়নিকগুলোর প্রভাব সম্পর্কে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানা যাচ্ছেনা। খাদ্য প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেজিং করার সময় রাসায়নিক শরীরে ঢুকে কী প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে গিউকে জানিয়েছেন। আগে ১৪০০০ ফুড কন্ট্যাক্ট কেমিক্যালস তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল, যা প্লাস্টিক, কাগজ, গ্লাস, ধাতব পদার্থ থেকে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। প্যাকিজং ছাড়াও কনভেয়ার বেল্ট, রান্নাঘরের বাসন থেকেও এগুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর বায়োমনিটারিং তথ্যভাণ্ডার থেকে মানুষের শরীরে কোন কোন রাসায়নিকের নমুনা পাওয়া গেছে তা দেখতে গিয়ে গবেষকরা অবাক হয়ে যান। তারা ভেবেছিলেন মানুষের প্রাপ্ত নমুনায় কয়েকশো রাসায়নিকের অস্তিত্ব থাকবে। কিন্তু সেখানে ৩৬০১ টা রাসায়নিকের নিদর্শন তারা পান।
অত্যন্ত উদ্বেগজনক রাসায়নিকের মধ্যে অনেকগুলো পিএফএএস ছিল, যা চিরকালের রাসায়নিক বা ফরএভার কেমিক্যালস হিসেবে পরিচিত। এদের সাম্প্রতিক মানবদেহের নানা অংশে শনাক্ত করা গেছে যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে যুক্ত। এছাড়া শনাক্ত করা বিসফেনল-এ, হরমোন-বিঘ্নকারী রাসায়নিক যা প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটা অনেক দেশেই শিশুদের বোতল তৈরিতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অপর হরমোন বিঘ্নিত রাসায়নিক থ্যলেটস বন্ধ্যাত্বের সাথে যুক্ত। গবেষকরা স্বীকার করেন, এগুলোর মাত্রা শরীরে কতটা তা জানা যায়নি। কিন্তু এগুলো একে অপরের সাথে বিক্রিয়া করে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। প্যাকেটজাত অবস্থায় খাবার গরম না করা, প্যাকেট যতটা সম্ভব পরিহার করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। এই গবেষণা জার্নাল অফ এক্সপোজার সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল এপিডেমিওলজি-তে প্রকাশিত হয়েছে।