১০ বছরের বাচ্ছাটি মায়ের তত্ত্ববধানেই খেলছিল নদীর কাছে একটা অনুচ্চ ঢিবির ওপর। হঠাৎ ঢিবি খুঁড়তে গিয়ে দেখলো গোল গোল শক্ত কি যেন একটা বস্তু। লাল মাটির মধ্যে গেঁথে আছে একদম। প্রথমে ভাবলো সিমেন্টের টুকরো হবে বোধ হয়। কিন্তু আর একটু ভালো করে দেখেই বুঝল, নাহ এতো সিমেন্ট নয়। তার বইতে দেখা ডায়নোসরের ডিমের মতো। মাকে ডেকে দেখালে মাও অনুমান করলো ডায়নোসরেরই ডিম হবে। তারপর মিউজিয়ামের এক্সপার্ট রা এসে নিশ্চিত করলো- ডায়নোসরের ডিমই। ফসিল অবস্থার। তখন বালকের বিষ্ময়ের সীমা নেই।
চলতি বছরের জুলাই মাসে খেলতে খেলতেই এমন হঠাৎই ১০ বছরের জাং ইয়াংঝে চীনের গুয়াংডং এর ‘হুয়ান’ শহরে ডং নদীর কাছে ঢিবির মধ্যে থেকে আবিষ্কার করে ফেলে ডায়নোসরের ফসিল ডিম। চীনা পত্রিকা ‘ল্যাডবিবেলে’র রিপোর্ট অনুযায়ী ইয়াংঝে পাঠ্য বইয়ের পাঠ থেকেই ডায়নোসরের ডিম বলে অনুমান করে খুঁজে পাওয়া বস্তুটিকে। মা লি সিয়াওফাং কে ডেকে দেখালে, মা তড়িঘড়ি লোকাল ‘হুয়ান ডায়নোসর মিউজিয়াম’-এ খবর পাঠায়। এবং ঢিবির উভয় পাশে গার্ড দাঁড় করিয়ে দেয় যতক্ষন না মিউজিয়ামের লোক এসে আবিষ্কৃত বস্তুকে সুরক্ষিত ভাবে নিয়ে যাচ্ছে। মিউজিয়ামের এক্সপার্ট রা এসে বস্তুটি যে ডায়নোসরের ফসিল ডিম সেকথা নিশ্চিত করে। এক্সপার্টরা ঐ দিনই বাচ্ছাটি যে স্থানে ফসিল ডিম খুঁজে পেয়েছে সে স্থান খুঁড়ে আরো ১০ টি ফসিল ডিম সংগ্রহ করেন। ডিম গুলি আকারে প্রায় ৩.৫ ইঞ্চি লম্বা। এরপর এক্সপার্টরা নিশ্চিত হন জাং ইয়াংঝে আসলে একটি প্রাচীন ডায়নোসরের বাসার হদিশ পেয়েছে। এক্সপার্টদের অনুমান ডিমগুলি প্রায় ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছরের পুরাতন।
মিউজিয়াম এর ডিরেক্টর হুয়াং ডিং ‘ডেইলি মেল’ পত্রিকা কে জানান, ডিমগুলি ক্রিটেসাস যুগের শেষ দিকের। কেননা তারপরই আনুমানিক ৬কোটি ৫০ লক্ষ বছর আগে ডায়নোসরের বিলুপ্তি ঘটবে পৃথিবী থেকে। উল্লেখ্য স্বাভাবিক ভাবেই ফসিল ডিম গুলি নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার আয়োজন চলছে। গবেষকরা জানতে চাইছেন ঠিক কোন প্রজাতির ডায়নোসরের ডিম এগুলি? তাছাড়াও ডায়নোসরের বাসার হদিশ হয়তো ডায়নোসর ধ্বংসের আগে প্রাগৈতিহাসিক জীব সম্পর্কে গবেষকদের আরো ভালো করে জানতে সাহায্য করবে।
মজার ব্যাপার এই আবিষ্কারের পর থেকেই হুয়ান শহরকে ‘হোম অফ ডায়নোসর’ বলা হচ্ছে চীন দেশে।