আপনি কি সিন্ধু – গঙ্গা নদীর সংলগ্ন ভূমিতে বাস করেন? তাহলে তা আপনার জন্য বিশেষ সুসংবাদ নয়। দেশের অন্যান্য অংশের মানুষের তুলনায় আপনার বাঁচার সম্ভাবনা সাত বছর কমে যাবে। এই কথা জানাচ্ছে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের (EPIC) এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের ২০১৯ সালের গবেষণা। তারা জানাচ্ছেন যারা চণ্ডীগড়, দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, বিহার, এবং পশ্চিমবঙ্গ এই সমস্ত রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে এই বিপদ আসবে। এই বিপদের আওতাভুক্ত পূর্ব পাকিস্তান, দক্ষিণ নেপাল, বাংলাদেশের মানুষরাও। এর কারণ কী?
ফসলের আগুন থেকে বেরোনো ধোঁয়া একটা প্রধান কারণের মধ্যে পড়ে। তাছাড়াও অন্য কারণ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) – এর তথ্য অনুসারে, থর মরুভূমি থেকে পশ্চিমে ধূলিকণার প্রবাহ, মোটর গাড়ি থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন, শিল্প ও নির্মাণশিল্পের দূষণ, আতশবাজির ধোঁয়া, গরম রাখার জন্য আগুন বা রান্নার আগুন থেকেও বায়ুতে ভাসমান কণা ও অন্যান্য দূষণকারী উপাদান তৈরি হয়। নাসা জানিয়েছে, ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়া এই অঞ্চলের বায়ুর গুণমানকে আরও খারাপ করে তোলে। নভেম্বর – ডিসেম্বরে তিব্বত মালভূমি থেকে শীতল বাতাস ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমিতে প্রবেশ করতে থাকে, যা এখানকার বায়ুর ধোঁয়াশার সাথে মিশে যায়। আর এটা অনেকটা ঢাকনার মতো কাজ করে, দূষিত বাতাসকে বেরোতে দেয় না পৃষ্ঠের কাছে আটকে রাখে। দূষিত বায়ুর কুয়াশার চাদর উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বতের মধ্যে আবদ্ধ থাকে। বিশ্ব জনসংখ্যার ৯শতাংশের আবাসস্থল হল গঙ্গা -সিন্ধু নদীর অববাহিকা। তার মধ্যে ভারতে আবার এই অববাহিকার সিংহ ভাগ অবস্থিত। আর ভারতের জনসংখ্যার চল্লিশ শতাংশ সমভূমিতে বাস করে। শিকাগো ইউনিভার্সিটির এই সমীক্ষা অনুসারে গঙ্গা -সিন্ধু নদীর অববাহিকায় ১৯৯৮ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বায়ু দূষণ ৭২ শতাংশ বেড়েছে।