গবেষণায় দেখা গেছে শৈশবে চিনাবাদাম খাওয়া বয়ঃসন্ধিকালে অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে

গবেষণায় দেখা গেছে শৈশবে চিনাবাদাম খাওয়া বয়ঃসন্ধিকালে অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ জুন, ২০২৪

অনেক সময় আমাদের খাবার থেকে অ্যালার্জি হয়। ত্বকে র‌্যাশ বেরোনো, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, গলার ভিতর এবং বাইরে অস্বস্তি হওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়। কারও কারও অ্যালার্জির পরিমাণ এতটাই বেড়ে যায় যে, শ্বাসনালি ফুলে গিয়ে শ্বাসরোধ হয়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এই অ্যালার্জি কিন্তু প্রাণের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলতে পারে। চিনেবাদাম খেলেও অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। কারণ, বাদামের মধ্যেও ‘অ্যালার্জেনিক’ প্রোটিন থাকে। এই ধরনের প্রোটিন থেকেও কিন্তু ত্বকে এগজ়িমার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। পশ্চিমের দেশগুলোতে চিনাবাদামের অ্যালার্জি বাড়ছে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে প্রায় ২% শিশু চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত। কারো কারো ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ চিনাবাদাম খাওয়ার ফলে এমন অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হয় যা প্রাণঘাতী। ফলে বাবা মায়েরা ক্রমশ ভীত হয়ে উঠেছে।
নতুন এক গবেষণা জানিয়েছে শৈশব থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের নিয়মিত চিনাবাদাম খাওয়ানোর ফলে বয়ঃসন্ধিকালে চিনাবাদামের অ্যালার্জির হার ৭১% হ্রাস পেতে পারে। গবেষণা থেকে এও জানা গেছে যে শিশুর খাদ্যতালিকায় চিনাবাদাম যোগ করলে চিনাবাদামের অ্যালার্জির প্রতি দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে। কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক গিডিয়ন ল্যাক বলেন কয়েক দশক ধরে অভিভাবকরা তাদের শিশুদের চিনাবাদাম খেতে দিতে ভীতি বোধ করে। কিন্তু এই গবেষণা অনুসারে শৈশবকালে চিনাবাদাম খাওয়া শুরু করলে শিশুদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা গড়ে ওঠে। এই সহজ পদক্ষেপ বয়ঃসন্ধিকালে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আনবে এবং চিনাবাদামের অ্যালার্জি হ্রাস পাবে। কিংস কলেজের প্রধান গবেষকের মতে এটি একটি নিরাপদ এবং অত্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ যা শিশুর ৪ মাস বয়স থেকেই প্রয়োগ করা যেতে পারে। শিশু যখন ধীরে ধীরে মায়ের দুধ খাওয়া ছাড়বে তখন থেকেই তাদের শারীরিক বিকাশের জন্য চিনাবাদামের নরম পেস্ট তৈরি করে শিশুদের দেওয়া উচিত। শৈশব থেকেই চিনাবাদামের ব্যবহারের ফলে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী চিনাবাদামের কারণে অ্যালার্জির ১০০,০০০-এরও বেশি নতুন কেস প্রতিরোধ করবে বলে আশাবাদী গবেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =