হার্নিক অ্যাবাস। পৃথিবীর গভীরতম পরিশ্রুত জলের গুহা বা কেভ। চেক রিপাবলিকের হার্নিক প্রদেশে অবস্থিত বলেই এমন নামকরণ। চেক অ্যাকআডেমি অফ সায়েন্সের ভূতত্ববিদরা এবার হার্নিক অ্যাবাসের ভেতরকার প্রাথমিক মানচিত্র প্রস্তুত করে ফেললেন। কেভ প্রকৃতপক্ষে মাটির নিচে একরকমের ফাঁকা ঘরের মতো। যার ছাদ থেকে নিচে ঝুলতে থাকে অনেক গুঁড়ির মতো দন্ড। ঐ মাটির নিচের চুনাপাথর বৃষ্টির জল চুইয়ে পড়ে দ্রবীভূত হয়ে যায়। তাই সৃষ্টি হয়ে গুহা বা কেভ। আমাদের দেশের ভাইজ্যাগে যেমন আছে। কিন্তু অ্যাসিড মিশ্রিত ভৌম জল মাটির নিচের তাপেই অ্যাবাস কেভ সৃষ্টি করেছে বলে গবেষকরা ধারণা করছেন। কেননা, এই কেভের জলে কার্বন ও হিলিয়াম আইসোটোপ পাওয়া গেছে। যা মাটির অনেক নিচের স্তরেই পাওয়া যায়। ২০১৬ সালে ফাইবার অপ্টিক তারের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা হার্নিক অ্যাবাসের গভীরতা মাপেন ৪৭৩.৫ মিটার। যদিও হার্নিক অ্যাবাস কেভের বিস্তার নিয়ে এতদিন অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা ছিল। এবার চেক রিপাবলিকের বিজ্ঞানীরা সেই কেভের মধ্যেকার পরিস্কার ছবি তুলে আনলেন ভূতাত্ত্বিক কৌশলে। বিজ্ঞানীরা প্রথমে মাটির নিচের চুনাপাথর কত সহজে বিদ্যুৎ পরিচালনা করতে পারে সে তথ্য মাটির নিভে বিন্যস্ত বিদ্যুতবাহী তারের সাহায্যে সংগ্রহ করে সহজেই কেভের মধ্যেকার খাড়া পাথর গুলির দূরত্ব নির্নয় করেন। এরপর সেন্সর ব্যবহার করে কেভের মধ্যেকার অভিকর্ষজ টান নির্ণয় করেন এবং সর্বশেষে ভূকম্পীয় তরঙ্গের প্রভাব রেকর্ড করেন। তা দিয়েই তৈরি করেন অ্যাবাস কেভের মধ্যেকার প্রাথমিক ম্যাপ। উল্লেখ্য, বলগোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ববিদ ফ্রান্সিস সৌরো হার্নিক অ্যাবাসের মধ্যে বসবাসকারী জীব প্রজাতি নিয়ে আগ্রহী।
এতদিন মনে করা হতো মাটির ওপর থেকে ছিদ্র দিয়ে নিচে গিয়ে জল জমার কারণেই এধরণের গুহায় জল পাওয়া যায়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন বৃষ্টির জল মাটির ওপর থেকে চুইয়ে পড়েই সৃষ্টি হয়েছে অ্যাবাস কেভে জল সৃষ্টি হয়েছে। এ তথ্য পৃথিবীর অন্যান্য গভীর কেভ গুলিতে জল সঞ্চয়ের কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।