উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজি মিউজিয়ামের গবেষক ডেভিড লাভলেস ওয়াইমিং এক পাথুরে অঞ্চলে জীবাশ্মের সন্ধান করছিলেন। সেখানে তিনি পাথরের ছোটো নলাকার একটা কাঠামো দেখেন, আর এরকম চোঙের মতো বেশ কয়েকটা বড়ো কাঠামো পান। এই কাঠামোগুলো অনেক আগে প্রাণীরা তৈরি করেছিল বলে তিনি মনে করেন। এরকম কয়েকটা নল নিয়ে তিনি ল্যাবে ফেরেন। ল্যাবে ফিরে একটা ছোটো নলের মধ্যে জীবাশ্ম আছে কিনা তিনি তার খোঁজে হাতুড়ি দিয়ে নলটা ভাঙেন। আর একটা ছোটো দাঁতওয়ালা খুলি খুঁজে পান। তিনি জানান তীক্ষ্ণ, সূক্ষ্ম দাঁত দেখে তাঁর প্রথমে মনে হয়েছিল, এটা একটা বাচ্চা কুমির। কিন্তু সবকটা অংশ একসঙ্গে রেখে, তা সাজিয়ে বুঝতে পারেন এটা এক ধরণের উভচর। লাভলেস, ফিল্ড মিউজিয়ামের একজন পোস্টডক্টরাল গবেষক জেসন পারডোর কাছে যান, যিনি জীবাশ্ম উভচর বিশেষজ্ঞ। তিনি একটা অন্য চোঙের গর্তের উচ্চ-রেজোলিউশন সিটি স্ক্যান করে ভেতরে একটা ছোটো কঙ্কাল দেখতে পান।
এবার গবেষকরা পুরোনো জায়গায় ফিরে গিয়ে, এই গর্তগুলোর খোঁজ করতে থাকেন। গবেষকদের মতে খোঁজার দরকার পড়েনি, চারদিকে এরকম গর্ত ছড়ানো ছিল। এখান থেকে তারা প্রায় ৮০টা জীবাশ্মের গর্ত সংগ্রহ করেন, যার বেশিরভাগের মধ্যে মাথার খুলি এবং হাড় ছিল। প্রাচীন উভচর প্রাণীদের আংশিক অবশেষের ওপর ভিত্তি করে, গবেষকরা মনে করেন প্রাণীগুলো সম্ভবত প্রায় এক ফুট লম্বা ছিল, তাদের ছোটো, অনুন্নত বাহু ছিল। গবেষকদের ধারণা এদের গর্ত খোঁড়ার অন্য কোনো উপায় ছিল।
তেইশ কোটি বছর আগে, এখনকার ওয়াইমিং-এ নাটকীয় ঋতুচক্র দেখা যেত। মুষলধারে কয়েক মাস ধরে বৃষ্টির পরে, এই অঞ্চল অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে পড়ত। এই আবহাওয়াতে বেঁচে থাকা উভচরদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং, কারণ তাদের ত্বক আর্দ্র রাখার দরকার পড়ে। প্রসিডিংস অফ দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি-র জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় গবেষকরা জীবাশ্ম উভচরের এই নতুন প্রজাতি বর্ণনা করেছেন। তাঁরা জানান এই প্রাণীরা টর্পেডো-আকৃতির গর্তগুলোতে ঢুকে শুষ্ক মরসুম শেষের অপেক্ষা করত।