গানের তালে মানুষের মতোই শরীর দোলায় ইঁদুরও

গানের তালে মানুষের মতোই শরীর দোলায় ইঁদুরও

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৪ নভেম্বর, ২০২২

স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো গানের তাল বুঝতে পারা – বিট সিঙ্ক্রোনিসিটি বলা হয় বিজ্ঞানের পরিভাষায়। আমরা খুব সহজাতভাবেই এটা পারি আর করেও থাকি। জীবনে যে গান শুনিনি সে গানেও আমরা মাথা দোলাতে পারি বা তালের ঠিক মুহূর্তে হাঁটুতে আঙ্গুল বাজিয়ে থাকি। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে কেউই আমরা আর আলাদা করে ভাবি না।
কিন্তু সায়েন্স অ্যাডভান্সেস পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন এই একই প্রতিভা নাকি ইঁদুরের মধ্যেও আছে। তারাও বুঝতে পারে গানের তাল। মানুষের দেহে এই প্রবণতা ঠিক কোন পদ্ধতিতে ঘটে সেটা বুঝতে পরবর্তীকালে হয়তো সাহায্য করবে এই নতুন গবেষণা।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার হিরোকাজু তাকাহাসি বলছেন, মানুষ সবচেয়ে পরিষ্কার বিট সিঙ্ক্রোনাইজেশান দেখায় ১২০-১৪০ বিটস পার মিনিট বা বিপিএমে। সেই একই পরিসরে সবচেয়ে ভালো করেছে ইঁদুরেরাও। যদিও তাদের কিন্তু আগে গান শোনার কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না।
গবেষকরা ১০টা ইঁদুরের মগজের সাথে জুড়ে দিয়েছিলেন একটা করে অ্যাক্সিলোমিটার। তারপর তাদের জন্য গান শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। টানা ৬০ সেকেন্ড ধরে মোজার্টের ডি মেজরে ‘সোনাটা ফর টু পিয়ানোস’ শুনেছে ঐ ইঁদুরগুলো। চারটে আলাদা লয়ে ঐ গান চলেছিল। ৯৯ বিপিএম, ১৩২ বিপিএম, ২৬৪ বিপিএম আর ৫২৮ বিপিএম।
অ্যাক্সিলোমিটার থাকার কারণে গবেষকরা ইঁদুরের মাথার সামান্য নড়াচড়াও টের পেতে থাকেন। একইভাবে ২০ জন মানুষের উপরেও এই পরীক্ষা করা হয়। তাদের হেডফোনের সাথেই লাগানো ছিল অ্যাক্সিলোমিটার। গবেষকরা পরীক্ষার শেষে তাজ্জব। দেখা গেছে ১৩২ বিপিএম-এ মানুষের মতোই মাথা দোলাচ্ছে ইঁদুরেরা। ঐ নির্দিষ্ট লয়েই তালটা সবচেয়ে ভালো বুঝতে পেরেছে উভয় প্রাণীই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × three =