ঘুমের সময় ফোন থেকে দূরে থাকুন

ঘুমের সময় ফোন থেকে দূরে থাকুন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Default Alt Text

ছোটো থেকে বড়ো সকলেরই এখন মোবাইলে বড়ো বেশি আসক্ত। পড়াশোনা বা কাজের ফাঁকে সময় পেলেই সময় কাটানোর সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় মোবাইল। শুধু তাই নয়, বেশির ভাগেরই অভ্যাস রাতে বিছানায় শুয়েও ফোন ঘাঁটা। অনেকেই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম না ঘাঁটলে অথবা গেম না খেললে কিছুতেই চোখের পাতা এক করতে পারে না। ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় জানা গেছে মোবাইল দেখা নয় বরং রাতের বেলায় কখন মোবাইল দেখছে তা কম বয়সী ছেলেমেয়েদের ঘুমের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বর্তমানে বলা হচ্ছে শোবার আগে বা দুই ঘণ্টার মধ্যে স্ক্রিন ব্যবহার না করাই ভালো। তবে গবেষকরা দেখেছেন শোয়ার ঘন্টাদুয়েক আগে স্ক্রিন টাইম ঘুমের উপর সামান্য প্রভাব ফেলেছে, যা সমস্যার সৃষ্টি করছে তা হল বিছানায় শোয়ার পরের স্ক্রিন টাইম।
জামা পেডিয়াট্রিক্সে প্রকাশিত গবেষণায় ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৮৫ জন কিশোর-কিশোরীকে এক সপ্তাহ ব্যাপী ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে থেকে বিছানায় যাওয়া অবধি বুকে একটি বডি ক্যামেরা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কখন, কীভাবে তারা স্ক্রিন ব্যবহার করেছে তা ধরার জন্য বডি ক্যামেরার পাশাপাশি তাদের শোবার ঘরে একটি দ্বিতীয় ইনফ্রারেড ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীরা অ্যাক্টিগ্রাফ নামের একটি ঘড়ির আকারের যন্ত্র পরিধান করেছিল যা তাদের ঘুম পরিমাপ করে। গবেষকদের মতে এটি দ্রুত স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে কিশোর-কিশোরীরা বিছানায় শোয়ার সময় অনেক বেশি মোবাইল ব্যবহার করে। তারা দেখেন ৯৯% অংশগ্রহণকারী ঘুমানোর দুই ঘন্টা আগে স্ক্রিন ব্যবহার করেছে, অর্ধেকেরও বেশি কিশোরকিশোরী বিছানায় শোয়ার সময় মোবাইল দেখেছে এবং এক তৃতীয়াংশ জন ঘুমোতে যাওয়ার চেষ্টা করার পরে মোবাইল ব্যবহার করেছে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে ফলাফল গবেষকরা তুলে ধরেছেন তা হল বিছানায় যাওয়ার আগে এই স্ক্রিন টাইম ঘুমের উপর সামান্য প্রভাব ফেলে। তবে, বিছানায় শোয়ার পরের স্ক্রিন টাইম তাদের ঘুমকে ব্যাহত করে। মোবাইল রাখার পর তাদের প্রায় আধঘন্টা সময় লাগে ঘুমোতে এবং সেই রাতে তাদের ঘুমের পরিমাণও কমে যায়। এই ঘটনাটি বিশেষ করে যারা মোবাইলে গেম খেলে তাদের জন্য সত্য। প্রতি ১০ মিনিটের অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম তাদের ঘুমের পরিমাণও প্রায় একই মাত্রায় কমিয়ে দেয়। মোবাইলের নীল আলো চোখে প্রবেশ করে, আঘাত করে মস্তিষ্কে। ফলে মস্তিষ্কে মেলাটোনিনের ক্ষরণ কমে যায়, যা সরাসারি প্রভাব ফেলে ঘুমের উপর। আর ঘুম না হলেই শরীরে বাসা বাঁধে হাজার রকমের রোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × two =