ঘুম ও খাদ্যাভ্যাস একে অন্যের পরিপূরক

ঘুম ও খাদ্যাভ্যাস একে অন্যের পরিপূরক

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

ভালো ঘুম না হওয়া, অনিদ্রা এবং অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো ঘুমের ব্যাধিতে প্রচুর মানুষ ভুগছেন। স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন একটি অবস্থা যেখানে ঘুমের সময় উপরের শ্বাসনালী আটকে যায় এবং শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। লক্ষ করলেই দেখা যায় মানুষ আজকাল বেশি চর্বিযুক্ত, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে, ফাইবার সমৃদ্ধ ফল, শাক সবজি খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছে।
গবেষণা জানায় সামগ্রিক খাদ্যতালিকা ঘুমের গুণমানকে প্রভাবিত করতে পারে এবং অনিদ্রা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গবেষকরা ২০১১- ২০১৬ র তথ্য ঘেঁটে দেখেন, যারা যথেষ্ট পরিমাণে ফল, সবজি, ডাল, দানাওয়ালা শস্য খান না, তাদের ঘুমের পরিমাণ কম। তারা ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১০০০ জন মানুষ নিয়ে ওয়েব বেসড ইন্টারভেনশন স্টাডি করেন, যেখানে ফল, শাক সবজি প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে রাখার কথা বলা হয়। যারা সেই অনুযায়ী খাবার খায়, তিন মাসের মধ্যে তাদের ভালো ঘুম হতে থাকে, অনিদ্রা দূর হয়। গবেষণায় দেখা গেছে চর্বিযুক্ত মাছ, দুগ্ধজাত খাবার, কিউই ফল, টার্ট চেরি এবং স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি এগুলো ভালো ঘুমের সাথে যুক্ত। এই খাবারগুলো মেলাটোনিন দিয়ে ঘুমকে প্রভাবিত করতে পারে, এটা মস্তিষ্কে ঘুম এবং জাগরণ চক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মডুলেটর। ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার যেমন মটরশুটি, ওটমিল এবং কিছু প্রোটিন যেমন পোল্ট্রির মাংস যেগুলোতে অ্যামিনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান বেশি থাকে, সেগুলো উচ্চ মানের ঘুমের সাথে যুক্ত। ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন ডি, আয়রন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ম্যাঙ্গানিজ ঘুমের জন্য উপকারী।
একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, খাদ্যাভ্যাস যেমন ঘুমে প্রভাব ফেলে, তেমন ঘুমও খাদ্যাভ্যাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বয়স, অর্থনৈতিক অবস্থার সাথেও এই দুটো বিষয়ের যোগ আছে। তৈলসমৃদ্ধ খাবার, ভাজাভুজি যেমন ঘুমের অন্তরায়, তেমন মদ্যপান করলে অ্যালকোহলের জন্য চট করে ঘুম এসে গেলেও, এটা ঘুমের ধরনে ব্যঘাত ঘটায়, র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট, যা প্রথম দিকের ঘুমের বৈশিষ্ট্য তা কমে গিয়ে ভালো ঘুম হয় না। টানা বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে ওজন বেড়ে যায়, তাতে স্লিপ অ্যাপনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। আর একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মহিলাদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় অনিদ্রায় ভোগার সম্ভাবনা বেশি। ভালো ঘুমের জন্য ভালো খাদ্যাভ্যাস ও দিনের শুরুর দিকে বেশি ক্যালরি গ্রহণ, রাতে হালকা খাওয়া, সন্ধ্যের পর কফি বেশি পান না করা ভালো জানিয়েছেন জন হপকিন্সে হস্পিটালের ঘুম বিশেষজ্ঞ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 9 =