ঘুম কত জরুরি

ঘুম কত জরুরি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ অক্টোবর, ২০২৩

আপনি কী মনে করেন যে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার একটা নিশ্চিন্ত ঘুম আপনাকে সুস্থ রাখছে? আপনি হয়তো মনে করছেন যে আপনার বয়স কম বা আপনি সর্বদা সক্রিয় থাকার জন্য আপনার আট থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন নেই, তাহলে কিন্তু আপনি অত্যন্ত ভুল করছেন। একইভাবে, রাত জেগে কাজ করা বা সারা রাত পার্টি করাও কিন্তু শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। গবেষকরা বলছেন অল্প সময়ের জন্যও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ প্রভাবিত হয় যা সহজে ঠিক হওয়ার নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সুস্থ ব্যক্তিদের ১১ দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখেন যে তাদের পাঁচ রাতের ঘুমের অভাব পরবর্তী ক্ষেত্রে দুই রাত পর্যাপ্ত এবং শান্তিপূর্ণ ঘু্মিয়েও পূরণ করা যায়নি। আর এই ৫ রাত জেগে থাকার কারণে তাদের রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন দুই বৃদ্ধি পায় যা পরে ২ রাত ঘুমিয়েও ঠিক করা যায়নি। গবেষণার ফলাফল সাইকোসোম্যাটিক মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছিল।
মোহালির আইভিওয়াই হাসপাতালের ডাঃ বীরেন্দর সারওয়ালের মতে সারাদিনে এই প্রদাহ ও ধকল থেকে শরীরকে রেহাই দিতে রাতে আট ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। এর ফলে হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিষ্ক উভয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে এবং সারাদিনে প্রায় ১৬ ঘন্টা সময় ধরে শরীরের যে পরিশ্রম হয় তা থেকে শরীর নিস্তার পায়। ঘুমের অভাব শরীরকে পরিশ্রান্ত করে তোলে এবং হার্টের সমস্যা সৃষ্টি করে, রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের কলাতে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পায় যা হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। রাতে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন ঘুম দরকার। ঘুমের সময়কে দিন এবং রাতের মধ্যে ভাগ করলে তা ঘুমের চক্রকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে, এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এর কারণ হল নির্দিষ্ট কিছু হরমোন রয়েছে যা শুধুমাত্র রাতে নিঃসৃত হয়, তাই ঘুমের অভাবের কারণে তাদের নিঃসরণ বিঘ্নিত হয় যা উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন সৃষ্টি করে, শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ তৈরি করে এবং ব্যক্তিটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। ঘুম না হওয়ায় স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়, সাধারণ প্রদাহ, এবং রক্তনালীর কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করে, ধমনীর দেয়ালে এবং তার উপর চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমা হওয়ায় হার্টের সমস্যা হয় এবং হার্ট অ্যাটাক বৃদ্ধি পায়। এই বিপাকীয় পরিবর্তনগুলো ছাড়াও, ঘুমের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় মানসিক সতর্কতা এবং একাগ্রতা কমে যায়, বৌদ্ধিক সক্ষমতা হ্রাস পায় এবং ব্যাক্তির মানসিক সুস্থতা প্রভাবিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × five =