ঘুম-বঞ্চিত বাচ্চাদের মস্তিষ্কে উদ্বেগজনক প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে

ঘুম-বঞ্চিত বাচ্চাদের মস্তিষ্কে উদ্বেগজনক প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ জুলাই, ২০২৪
বাচ্চাদের-মস্তিষ্কে

ঘুম আমাদের শরীরের জন্য, মস্তিষ্কের কাজের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে অল্প সময় ঘুম, রাতে দেরি করে শোওয়া মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশের পক্ষে বেশ ক্ষতিকারক। সঠিক ঘুমের অভাব মস্তিষ্কের মানসিক চাপের সাথে মোকাবিলা এবং নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণের অঞ্চলের পক্ষে ক্ষতিকারক। গবেষণায় দেখা গেছে নিম্ন অর্থনৈতিক সংস্থান যে পরিবারের তাদের শিশুদের ঝুঁকি বেশি। শিশুর বিকাশে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য কমাতে নিউরোসায়েন্টিস্টরা আর্থ-সামাজিক অসুবিধা কীভাবে শিশুদের ঘুমের স্বাস্থ্য এবং মস্তিষ্কের বিকাশকে প্রভাবিত করে তা বোঝার জন্য গবেষণা করেছেন। তারা নিউইয়র্কে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক পরিবারের ৯৪ জন ৫ থেকে ৯ বছরের শিশুদের পর্যবেক্ষণ করেছেন। অংশগ্রহণকারী পরিবারের মধ্যে প্রায় ৩০% যুক্তরাষ্ট্রের দারিদ্র্যসীমার নীচে ছিল।
অ্যামিগডালা আবেগ প্রক্রিয়াকরণে ও নেতিবাচক আবেগ অনুভবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবনের প্রথম দিকের প্রতিকূলতা অ্যামিগডালার কাজকে প্রভাবিত করে। স্বল্প অর্থনৈতিক সংস্থানের পরিবারের শিশুরা রাতে কম ঘুমোয় আর উচ্চ অর্থনৈতিক পরিবারের শিশুদের তুলনায় পরে ঘুমাতে যায়। কম ঘুমোনো আর পরে ঘুমাতে যাওয়া অ্যামিগডালার আকার হ্রাস করে, পাশাপাশি অ্যামিগডালা ও অন্যান্য আবেগ-প্রক্রিয়াজাত মস্তিষ্কের অঞ্চলের মধ্যে দুর্বল সংযোগ দেখায়। এই বিষয় পাঁচ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে, পড়াশোনায় প্রভাব পড়ে। কম ঘুম হলে শিশুদের চাপের সাথে মানিয়ে নিতে, আবেগ পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। শৈশবে মস্তিষ্ক খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়, তাই শৈশবকালীন অভিজ্ঞতা মস্তিষ্কের কাজে সারা জীবনের জন্য ছাপ ফেলে। শৈশবে সমস্যা শুরু হলে সারা জীবন তা চলতে থাকে।
দরিদ্র পরিবারের বাবা মায়েদের জীবন ধারণের জন্য বেশিক্ষণ কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। তাদের বিশ্রামের সময় কম থাকে, তাই তাদের সন্তানদেরও বিশ্রাম কম হয়। বিশ্রামের স্থানও আরামদায়ক যথোপযুক্ত হয় না। সাধারণত ঘুমের ওপর গবেষণা টিন এজারদের ওপর করা হয়। কিন্তু বর্তমান গবেষণা বলছে ঘুমের জন্য পরিবেশ ও অভ্যাস অনেক ছোটো বয়স থেকেই কাজ শুরু করে। ভালো ঘুমের জন্য তাই আগে থেকেই কাজ শুরু করা দরকার। খাওয়া, পড়ার পাশাপাশি আপনার সন্তানের ঘুম যেন ঠিকমতো হয় তা দেখার দায়িত্বও কিন্তু আপনার।