চাঁদের পর এবার সূর্যে পাড়ি দেবে ভারত

চাঁদের পর এবার সূর্যে পাড়ি দেবে ভারত

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ আগষ্ট, ২০২৩

চাঁদের পর এবার সূর্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবে ভারত। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO) ঘোষণা করেছে যে মহাকাশযান আদিত্য-এল ১ আগামী ২রা সেপ্টেম্বর উৎক্ষেপণ হবে। আপাতত সেটিকে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে বসানো হয়ে গিয়েছে। পৃথিবী থেকে সাড়ে দশ লক্ষ কিলোমিটার দূরে পাঠানো হবে আদিত্য এল ১–কে। সূর্যের অভিমুখে ওই দূরত্ব অবধি এগিয়ে থেমে যাবে আদিত্য।
পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার আর তার অগ্রগতির মূল কারণ হল সূর্য। সৌরজগতের মধ্যমণি এই সূর্যকে ঘিরেই রয়েছে নানা কৌতূহল। আর তাই সূর্যের বিষয়ে নানা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। সে দৌড়ে ভারতও সামিল হয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এটি প্রথম সৌর অভিযান। মহাকাশযানটিকে হ্যালো কক্ষপথে সূর্য-পৃথিবী মধ্যে ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট ১ (L1)-এ স্থাপন করা হবে, যা পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই অবস্থানের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। এই অবস্থানে কোনো মহাকাশযান সূর্যকে কোনোরকম বাধা ছাড়াই সর্বক্ষণ দেখতে পাবে। অর্থাৎ সূর্যের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণের কোনো বাধাই থাকবে না। মহাকাশযানটি সাতটি পেলোড বহন করবে এবং বিদ্যুতচৌম্বকীয় কণা এবং চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ডিটেক্টরের সাহায্যে ফটোস্ফিয়ার অর্থাৎ সূর্যের গভীরতম স্তর, ক্রোমোস্ফিয়ার এবং সূর্যের বাইরের স্তর বা করোনা পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। সাতটি পেলোডের মধ্যে, চারটি সরাসরি সূর্যকে নিরীক্ষণ করবে, এবং বাকি তিনটি ল্যাগ্রেঞ্জ বিন্দু L1-এ কণা এবং ক্ষেত্রকে বিশ্লেষণ করবে। আদিত্য এল ১ পেলোড সূর্যের বাইরের স্তর করোনার উত্তাপ, সৌর পদার্থের নিঃসরণ, অগ্নিশিখার বিচ্ছুরণ তাদের বৈশিষ্ট্য, মহাকাশ আবহাওয়ার গতিশীলতা প্রভৃতি বিষয় তথ্য সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পৃথিবী এবং সৌরজগত ও তার বাইরের এক্সোপ্ল্যানেট সহ প্রতিটি গ্রহ বিবর্তিত হয় — এবং এই বিবর্তনটি তার মূল নক্ষত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সৌর আবহাওয়া এবং পরিবেশ সমগ্র সিস্টেমের আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে। এই আবহাওয়ার পরিবর্তন স্যাটেলাইটের কক্ষপথ পরিবর্তন করতে পারে বা তাদের জীবনকে ছোটো করতে পারে, স্যাটেলাইটের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্সের ক্ষতি করতে পারে এবং পৃথিবীতে পাওয়ার ব্ল্যাকআউট এবং অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সৌর জগতের গতিবিধি মহাকাশের আবহাওয়া বোঝার চাবিকাঠি। তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যের পর সবার প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। চেনা নক্ষত্র সম্পর্কে অচেনা তথ্য পাওয়ার জন্য সবাই তাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × four =