চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন জ্বালানি!

চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন জ্বালানি!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৭ মে, ২০২২

চাঁদের পৃষ্ঠ নিয়ে গবেষণা, পর্যবেক্ষণ, নিরীক্ষণ অনেক বছর ধরে চলছে। চাঁদের মাটিতে কোনওদিন মানুষ বাস করতে পারবে কি না বা বাস করতে পারলেও চাঁদের মাটিতে মানুষের বসবাস স্থিতিশীল হতে পারবে কি না সেটা বিজ্ঞানীদের গবেষণার অন্যতম বিষয়বস্তু। গবেষণা চললেও পরিষ্কারভাবে এখনও জানা যায়নি গবেষকদের মতামত। একদল চিনা গবেষক চাঁদের পৃষ্ঠ সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করেছেন নতুন ধারণার কথা। তারা জানিয়েছেন চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন এবং জ্বালানি তৈরি হতে পারে! চিনা গবেষকদের মনে হয়েছে চাঁদের পৃষ্ঠে যে মাটি রয়েছে তার মধ্যে এমন এক যৌগ রয়েছে যা কার্বন ডাই অক্সাইডকে অক্সিজেন এবং জ্বালানিতে রূপান্তরিত করতে পারে। চিনা গবেষকরা আরও জানিয়েছেন চন্দ্রপৃষ্ঠে যে মাটি রয়েছে তাকে হাইড্রোজেন এবং মিথেন পাওয়ার ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যেতে পারে। এই আবিষ্কারের ফলে চাঁদে মানুষের বসবাস নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে গবেষণা আরও ইতিবাচক হবে। চিনা গবেষকদের আশা এর ফলে চাঁদের চারপাশে একটি শ্বাসযোগ্য পরিবেশও তৈরি হতে পারে। চিনা বিজ্ঞানীদের মতে এমন একটি পদ্ধতি তৈরি করার প্রয়োজন যার মাধ্যমে চাঁদের মাটি এবং সৌরবিকিরণ থেকে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করা যাবে। গবেষকরা নতুন এই পদ্ধতিকে বলছেন ‘এক্সট্রা টেরেস্ট্রিয়াল ফটোসিন্থেসিস স্ট্র্যাটেজি’। চিনের মহাকাশযান চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে যে মাটি এনেছিল সেই মাটি বিশ্লেষণ করে চিনের নানজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিজ্ঞানী ইয়াংফাং ইয়াও এবং ঝিগাং ঝাউ এই সিদ্ধান্তে এসেছেন চাঁদের মাটিতে বিভিন্ন রকমের যৌগ। এর মধ্যে আয়রন রিচ ও টাইটেনিয়াম রিচের উপাদানও তারা খুঁজে পেয়েছেন। আর এইসব উপাদান অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অকাইড তৈরির ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ করে। অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়াও এক্সট্রা টেরেস্ট্রিয়াল স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে চাঁদের মাটি থেকে মিথেন নিষ্কাশনও সম্ভব যা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন সুর্যালোক ছাড়া বাইরের কোনও শক্তি এই পদ্ধতির অন্তর্ভূক্ত হয় না। মানে কাজে লাগে না। এর আগে চাঁদে মানুষের উপস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য বিজ্ঞানীরা যে পদ্ধতিগুলোর কথা বলেছিলেন তার অধিকাংশ বাইরের শক্তির সহায়তায় সম্ভব হত। যেগুলোতে বসবাসের খরচ অনেক। কিন্তু এই প্রথম এমন এক পদ্ধতির আবিষ্কার হল যার সহায়তায়, আদৌ চাঁদে মানুষের বসবাস কোনওদিন সম্ভব হলে অনেক কম খরচে হয়ে যাবে। কারণ এই পদ্ধতিতে সুর্যের রশ্মি ছাড়া ছাড়া আর কোনও শক্তির প্রয়োজন হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + ten =