চাকা থাকবে না রোভারে। মাটিতেও চালাতে হবে না। উড়ন্ত চাকির মতোই কন্ট্রোল করা হবে তাকে। আর সেই উড়ন্ত চাকি বা ফ্লাইং সসার যাবে বিভিন্ন গ্রহে, গ্রহানুতে, এমনকি চাঁদেও। আর সেই ফ্লাইং সসার উড়বে সৌরশক্তিতে। এমনই অভিনব সসার বানিয়েছে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি। এবং এ সংক্রান্ত গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অফ স্পেসক্র্যাপ্ট অ্যাণ্ড রকেটস’ এ।
এমনিতে চাঁদে বা মঙ্গলে ভূপৃষ্ঠে নেমে যে গবেষণা চালানো হয় সেই গ্রহ বা উপগ্রহ সম্পর্কে, তার জন্যে ঐ গ্রহের পিঠে নামানো হয় রোভার। সে রোভার চাকাযুক্ত। পৃথিবী থেকেই নিয়ন্ত্রন করে রোভার চালাতে হয় এবং বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহ ও দেখার কাজ করে রোভার- যা গবেষণায় সহায়তা করে। এতদিন সায়েন্স ফিকশনের গল্পে ভিনগ্রহীদের এমন উড়ন্ত চাকির মতো মহাকাশযানের কল্পনা ছিল। এবার যে সব রোভার গ্রহ পৃষ্ঠে নেমে কাজ করে সেগুলির বিকল্প হিসেবে এই উড়ন্ত চাকি বা ফ্লাইং সসার তৈরি করলেন বিজ্ঞানীরা। এই সসার বানানো হয়েছে খুব হালকা পদার্থ ‘মাইলার’ দিয়ে- যা মূলত পলিইথিলিন টেরেপ্যাথলেট’। প্রযুক্তিবিদদের মতে এতেকরে গ্রহপৃষ্ঠে রোভার পাঠানোর কাজ সহজতর হবে।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য অনুযায়ী মূলত দুটি কারণে চাঁদে ও বা অন্য গ্রহে আগামী দিনে ফ্লাইং সসার পাঠানোর কথা ভাবার কয়েকটি কারণ আছে।
এক, বিমানের মতো উড়ন্ত যান থেকে নিচের অনেকবেশি এলাকা একসাথে দেখা সম্ভব। ফলে চাঁদ বা অন্য গ্রহের পৃষ্ঠের অনেক বেশি এলাকা একসাথে দেখা যাবে।
দুই, চাঁদ বা অন্যান্য গ্রহের পিঠ বা সারফেস আমাদের পৃথিবীর সারফেসের মতোই এবড়ো খেবড়ো। ফলে চাকার মাধ্যমে রোভার বেশিদূর চালানো সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ফ্লাইং সসার অনেক সুবিধাজনক।
তাছাড়াও আরো একটি সুবিধা আছে। যেসব গ্রহের বায়ুমন্ডল নেই সেখানে অনেকবেশি পরিমাণে সৌরশক্তি পাবে উড়ন্ত চাকিগুলি। সূর্য থেকে ছুটে আসা সৌরকণা (ইলেকট্রন) উড়ন্ত চাকি বা ফ্লাইং সসারে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চার করবে। ফলে ঐ ফ্লাইং সসার চালানোর জন্যে আলাদা করে জ্বালানি ভরে পাঠাতে হবে না। সৌরশক্তি দিয়ে চালিত হবার কারণে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে ঐ ধরণের উড়ন্ত চাকি বা ফ্লাইং সসারগুলি।