চাবি বা দৈনন্দিন জিনিসপত্র হারানো ‘সর্বদা দুর্বল স্মৃতির লক্ষণ নয়’

চাবি বা দৈনন্দিন জিনিসপত্র হারানো ‘সর্বদা দুর্বল স্মৃতির লক্ষণ নয়’

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৯ জুন, ২০২৪

আমরা অনেকেই খুব ভুলো মনের। বন্ধুদের জন্মদিন মনে থাকে না, হঠাৎ করে চেনা লোকদের নাম মনে পড়ে না, যেখানে সেখানে ছাতা, চশমা বা চাবি ভুলে ফেলে চলে আসি। এই সব ভুল প্রায় সকলেই করে থাকি। একটা সময় ধারণা ছিল, বয়স বাড়ার সাথে সাথে কমে স্মৃতির দৌড়, কিন্তু আধুনিক জীবনযাপনের চাপে সেই তথ্য আজ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ভুলে যাওয়ার সমস্যা এখন কম বয়সেই শুরু হয়ে যাচ্ছে। সে দোকান-বাজার থেকে কিছু আনার তালিকাই হোক বা দরকারি কোনো জিনিস সাবধানে গুছিয়ে রেখে পরে ভুলে যাওয়া— জীবনে চলার পথে মাথার কাজ চালানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এক নতুন গবেষণা স্মৃতিশক্তি কীভাবে কাজ করে সেই তথ্যই জানিয়েছে, সেখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে কোনো ব্যক্তিই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারে – এবং জিনিস খুঁজে না পাওয়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। মনোবিজ্ঞানীদের মতে তথ্য সংরক্ষণ করা এবং পুনরুদ্ধার করা আমাদের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি জটিল। অনেক সময় সিনেমা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা ফটোগ্রাফিক মেমরির কথা শুনতে পাই কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে সেটি খুবই বিরল। মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন অনেক সাধারণ তথ্য মনে রাখতে গিয়ে মস্তিষ্ককে বেশ কিছু তথ্য ভুলে যেতে হয় এবং সেটা খুবই স্বাভাবিক। স্মৃতি কোনো রেকর্ড করার যন্ত্র নয় যে সব তথ্য পর পর সংরক্ষিত থাকবে বরং মেমরিকে আমরা সংশোধন করতে পারি। আমাদের যদি কিছু মনে রাখতে সমস্যা হয় তখন আমরা আমাদের স্মৃতি সম্পর্কে বেশি সচেতন হয়ে উঠি আর তাই স্মৃতি কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে আমাদের অন্তর্দৃষ্টি কিছুটা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়ে। মনোবিজ্ঞানীরা আরও বলেন আমরা আমাদের ফোন, জলের বোতল বা চাবি খুঁজতে অনেকটা সময় ব্যয় করি কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে যে আমাদের স্মৃতি এই সব তথ্য মনে রাখার জন্য নয়। যদি আমরা এমন পরিস্থিতিতে থাকি যে কোনো জিনিস বা বিষয় নিয়ে আমাদের উদ্বেগ সৃষ্টি হয় তখন আমাদের মস্তিষ্ক সেই জিনিস বা বিষয়টি মনে রাখবে, সে সম্পর্কে সচেতন থাকবে। বেশ কয়েকটি উপায়ের কথাও তারা বলেছেন যার সাহায্যে আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে, যেমন পর্যাপ্ত ঘুমোনো, অ্যালকোহল বা ক্যাফেন খাওয়ায় রাশ টানা। অতিরিক্ত অন্ধকারে থাকার অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি করে, আমাদের মনে বিষণ্ণতা তৈরি করে। এই বিষণ্ণতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে মন্থর করে দেয়। প্রাকৃতিক আলোতে থাকলে আমাদের মস্তিষ্ক ভালোভাবে কাজ করে। ঘুম থেকে উঠেও সূর্যের আলোতে খানিক ক্ষণ সময় কাটাতে পারলে ভালো, এতে মনমেজাজ ভালো থাকে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বাড়ে। স্মৃতি বৃদ্ধি করতে মনোবিজ্ঞানীরা সংকেতের ব্যবহারের কথাও বলেছেন।