বয়স নির্বিশেষে আমরা অনেকেই চিউইং গাম চিবোই। ঘুরতে-ফিরতে অনেকেরই মুখে চিউইং গাম থাকে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের চিউইং গামও রয়েছে। আমাদের ছোটোবেলা থেকেই সতর্ক করা হয়েছে এই চিউইং গাম গিলে ফেললেই সর্বনাশ। কারণ এটি হজম হতে অনেক বছর সময় লাগে বা চিউইং গাম মোটেই হজম হয় না। বেখেয়ালে কখনও সখনও চিউইং গাম আমাদের পেটে চলে যেতে পারে। কিন্তু তার ফলে কি সত্যি বড়ো ক্ষতি হতে পারে?
ওহাইওতে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের সেন্টার ফর হিউম্যান নিউট্রিশনের এক ডায়েটিশিয়ানের মতে যারা দুর্ঘটনাক্রমে একটি বা দুটি গাম গিলে ফেলে তবে তা তাদের পরিপাকতন্ত্রের মাধ্যমে বর্জ্য হিসেবে শরীর থেকে বেরিয়ে আসতে সময় নেয় প্রায় ৪০ ঘন্টা, ঠিক যেমন খাবারের ক্ষেত্রে লাগে। সুতরাং চিউইং গাম মোটেই পেটের ভিতর আটকে থাকে না কিন্তু তা হজমও হয় না। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই পেট সেটিকে পাকস্থলী থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে পাঠিয়ে দেয়। চিকিৎসকদের মতে আমাদের শরীরে গাম জাতীয় জিনিস হজম করার জন্য কোনো এনজাইম নেই। সুতরাং, চিউইং গাম গিলে ফেললে তা আমাদের খাদ্যনালীর ভিতর দিয়ে গিয়ে আমাদের শরীর থেকে মলের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। চিউইংগাম, গাম বেস নামের একটি কৃত্রিম জিনিস দিয়ে তৈরি করা হয়। এই গাম বেসের মূল উপাদান হল- রেজিন, ইমালসিফায়ার এবং সফটনার- যা হজম করা যায় না। তবে এই গামে কিছু সুইটনারস বা চিনি অথবা চর্বি জাতীয় উপাদান থাকে যা আমরা হজম করে ফেলি। কিন্তু মূল রাবার জাতীয় বস্তুটি হজম হয় না। সুতরাং আলেকালে যদি একটা বা দুটো চিউইংগাম আমরা গিলে ফেলি তবে এমন কিছু সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তার মানে কি এই যে যথেচ্ছ চিউইং গাম গিলে ফেলা যাবে? মোটেই তা নয়। বরং তেমন হলে সত্যিই এই গাম বিপদ ডেকে আনতে পারে। একটির সঙ্গে আর একটি জুড়ে বড়ো আকার ধারণ করতে পারে চিউইং গাম। তখন খাদ্যনালীতে এই গাম আটকে গিয়ে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। চিউইং গাম আটকে যেতে পারে শ্বাসনালীতেও। এছাড়া বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফোলা এবং ব্যথা বা অন্ত্রের অভ্যাসের পরিবর্তনও ঘটাতে পারে। তাই চিউইং গাম চিবানো যেতেই পারে তবে অনেক বেশি চিউইং গাম পেটে চলে গেলেই বিপদ।