অমরত্ব লাভ করছে ! নাহ দেবতা বা অসুরকুল নয়, আজকের যুগে এক শ্রেণীর কৃত্রিম রাসায়নিক তারা অমরত্ব লাভ করছে। আসলে এরা পরিবেশে মিশে গিয়ে বিলীন হতে পারে না। এদের কোন পরিবর্তনও হয় না। এরা বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ অক্ষয় হয়ে থেকে যায়। এদের নাম রাখা হয়েছে ‘ফরেভর ক্যামিকেলস’ বা চিরকালের রাসায়নিক। বর্তমানে, পরিবেশ আর পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এই প্রাণীকুল তথা মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশে এরা অবাধে ঢুকে পড়ছে নানা অছিলায়।
সামুদ্রিক খাবার যেমন লবস্টার, চিংড়ি, টুনা… খেতে ভালবাসেন তো? সাবধান করছে যুক্তরাজ্যের ডার্টমাউথ কলেজের বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় তারা বলছেন যে, সামুদ্রিক খাবারের ঘন ঘন ব্যবহার, আপনার শরীরে ‘ফরেভর ক্যামিকেলস’ বা পলি-ফ্লুরোঅ্যালকাইল পদার্থের (পিএফএএস) ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। “চর্বিহীন প্রোটিন এবং ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি বড় উৎস এই সামুদ্রিক খাবার ৷ কিন্তু এটি মানুষের মধ্যে পিএফএএস এক্সপোজারের একটি সম্ভাব্য উত্সও,” মেগান রোমানো, সংশ্লিষ্ট লেখক এবং এপিডেমিওলজির সহযোগী অধ্যাপক, এমনটাই বলছেন।
গবেষণায়, জনপ্রিয় সামুদ্রিক খাবার যেমন লবস্টার, সালমন, স্ক্যালপ, কড, হ্যাডক, চিংড়ি এবং টুনাতে ২৬ টি বিভিন্ন ধরণের পিএফএএস পাওয়া গেছে। চিংড়ি এবং গলদা চিংড়িতে পিএফএএসের ঘনত্ব সর্বোচ্চ। তারা এই পিএফএএস গুলিকে বিশ্লেষণ করে দেখেন। তাতে, তারা দেখেন চিংড়ি এবং গলদা চিংড়ির প্রতি গ্রাম মাংসে, যথাক্রমে ১.৭৪ এবং ৩.৩০ ন্যানোগ্রাম পিএফএএস পাওয়া যায়। এই পদার্থগুলো, মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ- উভয়ের জন্যই যথেষ্ট ঝুঁকির কারণ।
রোমানো বলেন, “বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের জন্য ডায়েট সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সামুদ্রিক খাবার এই ঝুঁকি বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন ক্যান্সার, ভ্রূণের অস্বাভাবিকতা, উচ্চ কোলেস্টেরল, থাইরয়েড, লিভার এবং প্রজনন সমস্যাগুলির সাথে পিএফএএস এক্সপোজারকে সম্পর্কযুক্ত করেছে, যুক্তরাজ্যের ডার্টমাউথ কলেজের গিজেল স্কুল অফ মেডিসিন।
এই গবেষণা, সামুদ্রিক খাবারে পিএফএএস এর সম্ভাব্য ঝুঁকির প্রমাণ দিচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে, কিভাবে নিরাপদে এই সামুদ্রিক খাবার খাওয়া যেতে পারে! তার কোন প্রতিষ্ঠিত নির্দেশিকা সহ পথ দেখাতে পারেনি গবেষকরা।