চোরাশিকার রুখতে গণ্ডারদের খড়্গে রেডিওঅ্যাকটিভ বস্তু স্থাপন

চোরাশিকার রুখতে গণ্ডারদের খড়্গে রেডিওঅ্যাকটিভ বস্তু স্থাপন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ জুলাই, ২০২৪

দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা গণ্ডার শিকার রোধ করার লক্ষ্যে গণ্ডারদের খড়্গে তেজস্ক্রিয় উপাদান ইনজেকশন দিয়েছেন। এতে এই গণ্ডারদের সীমান্তে শনাক্ত করা সহজ হবে। এই দেশে বিশ্বের বেশিরভাগ গন্ডারের আবাসস্থল আর এশিয়ায় গণ্ডারের খড়্গের চাহিদা থাকায় চোরা শিকারেরও হটস্পট। এই শিংগুলোয় ওষধিগুণ সম্পন্ন মনে করে এগুলো পুরনো ধরনের ওষুধে ব্যবহৃত হয়। চোরাপথে গন্ডারের খড়্গের ওজন দামের দিক দিয়ে সোনা বা কোকেনের মতো উচ্চ। দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, সুরক্ষা দেওয়ার বিভিন্ন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে চোরাশিকারীর হাতে ৪৯৯ টা গণ্ডারের প্রাণ গেছে।
তাই গণ্ডারদের সুরক্ষার লক্ষ্যে মোট কুড়িটা জীবিত গণ্ডার নিয়ে পাইলট রাইসোটোপ প্রকল্প করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে গণ্ডারদের মেরে তাদের খড়্গের চোরাচালান রুখতে, তাদের শরীরে রেডিওঅ্যাকটিভ চিপ ফিট করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত চৌকিতে পরমাণু সন্ত্রাস প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী ইনস্টল করা ডিটেক্টর দিয়ে শনাক্ত করার মতো শক্তিশালী ডোজ গণ্ডারদের দেওয়া হবে। বন্দর এবং বিমানবন্দরে হাজার হাজার রেডিয়েশন ডিটেক্টর ছাড়াও বর্ডার এজেন্টদের হাতে সাধারণত রেডিয়েশন ডিটেক্টর থাকে যা নিষিদ্ধ বস্তু শনাক্ত করতে পারে।
গবেষকরা গণ্ডারের খড়্গে ফুটো করে দুটো রেডিওঅ্যাকটিভ চিপ লাগিয়ে দিয়েছেন। এর জন্য গণ্ডারদের ধরে তাদের ঘুম পাড়িয়ে খড়্গ ফুটো করে চিপ স্থাপন করা হয়েছে, এতে গণ্ডারদের কোনো ক্ষতি হয়নি বা তাদের ব্যথাও লাগেনি। এর রেডিওঅ্যাক্টিভিটি এত কম যে তার প্রভাব গণ্ডারদের স্বাস্থ্য বা পরিবেশের ওপর পড়বেনা। কিন্তু চোরাশিকারীদের কাছে খড়্গের কোনো মূল্য থাকবেনা, কারণ রেডিওঅ্যাক্টিভিটির জন্য খড়্গ মানুষের ব্যবহারের পক্ষে বিষাক্ত হয়ে যাবে। প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে যথাযথ বৈজ্ঞানিক প্রোটোকল এবং নৈতিক প্রোটোকল অনুসরণ করে প্রাণীর যত্ন নেওয়া হবে। এরপর গবেষকরা ফলো-আপ রক্তের নমুনা নেবেন গন্ডারগুলো সুরক্ষিত আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে। এই উপাদান গণ্ডারদের খড়্গে পাঁচ বছর স্থায়ী হবে, যা গণ্ডারদের চোরাশিকারীর হাত থেকে সুরক্ষা দেবে।