মাইকোটক্সিন – কিছু কিছু ছত্রাকের দেহে এই বিষাক্ত রাসায়নিক তৈরি হয়। খাদ্যশস্য নষ্ট তো করেই, সাথে মানুষের শরীর খারাপের কারণ হতে পারে এই বিষ। মাইকোটক্সিনের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বিষ হল আলফাটক্সিন। এতে যকৃতের ক্যান্সারের মতো মারণ ব্যাধি তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
আয়ারল্যান্ডের মেনোথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছত্রাক গবেষক ওজগুর বায়রাম বলছেন, এটা নীরব ঘাতক। কারণ অনেক সময়েই আমরা হয় ছত্রাক সংক্রমণ দেখতে পাই না নয়তো এড়িয়ে যাই। প্রোফেসর বায়রাম ও তাঁর সহকর্মীরা একটা প্রোটিন গ্রুপ শনাক্ত করতে পেরেছেন। এই প্রোটিন গ্রুপই মাইকোটক্সিন উৎপাদনের জন্যে দায়ী। ঐ গবেষকরা একটা পরীক্ষায় দেখিয়েছেন কীভাবে অ্যাস্পারজিলাস নিডুল্যান্স নামের ছত্রাকের দেহ থেকে মাত্র একটা প্রোটিনকে ছেঁটে বাদ দিলে এই বিষাক্ত রাসায়নিক উৎপাদন বন্ধ করা যায়।
নিউক্লিক অ্যাসিড রিসার্চ নামের পত্রিকায় গতমাসে প্রকাশিত হয়েছে নতুন এই গবেষণাপত্র। নিডুল্যান্স ছত্রাকের দেহে চারটে প্রোটিন পরস্পর যুক্ত হয়ে একটা চাবির মতো জিনিস তৈরি করে। ঐ চাবি থেকেই শুরু হয় মাইকোটক্সিন তৈরি হওয়ার কাজটা। গবেষক দল দেখিয়েছেন ঐ চার প্রোটিনের মধ্যে একটাকে আলাদা করে দিলেই চাবির কারসাজি বন্ধ হয়। সাথে সাথে থেমে যায় ঐ বিষাক্ত রাসায়নিকের উৎপাদনও।
ছত্রাক ও সমগোত্রীয় জীবগোষ্ঠীর প্রকোপে পৃথিবীর মোট খাদ্যশস্যের এক তৃতীয়াংশ নষ্ট হয় প্রতি বছর। অধ্যাপক বায়রাম বলছেন, নতুন গবেষণা থেকে যদি সেটা ঠেকানোর কোনও উপায় আবিষ্কার করা সম্ভব হয় তাহলে ৮০০ মিলিয়ন মানুষকে ২০২২ সালে খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব।