জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পার্বত্য অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পার্বত্য অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ এপ্রিল, ২০২৪

জীবাশ্ম জ্বালানির মাত্রাছাড়া ব্যবহার ঘটিয়ে বাতাসে উত্তরোত্তর উদ্বেগজনক হারে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন ঘটিয়ে আধুনিক সভ্যতা বাতাসকে বিষিয়ে দিচ্ছে। তার ফলে, হচ্ছে উষ্ণায়ন, জলবায়ুর পরিবর্তন। বাড়ছে তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, বন্যা, অতিবৃষ্টি, খরা, টাইফুন, টর্নেডো, ঘূর্ণিঝড়, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের মতো ঘটনার সংখ্যা ও তীব্রতা। নদীর গতিপথ বদলে যাচ্ছে। দুই মেরুর বরফ গলে যাওয়ার ফলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের ১৭ টি পাহাড়ে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে। নেচারে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, এই হুমকির পরিমাণ গভীরভাবে বোঝার জন্য বিশ্বব্যাপী পার্বত্য অঞ্চলে অতিরিক্ত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা অপরিহার্য। এই পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিলের পার্বত্যঅঞ্চল, ইরান-পাকিস্তান অঞ্চল, পশ্চিম আমেরিকা এবং মেক্সিকো, ভূমধ্যসাগরীয় অববাহিকা এবং উত্তর-পূর্ব এশিয়া। তাদের গবেষণায়, গবেষকরা এই পর্বত অঞ্চলগুলোতে সর্বোচ্চ জলবায়ু বেগ পর্যবেক্ষণ করেছেন। জলবায়ু গতিবেগ জলবায়ু অবস্থার পরিবর্তনের হার ট্র্যাক করে।
পার্বত্য অঞ্চলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং, যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু তথ্যের ঘাটতি দেখা দেয়। এর সঙ্গে রয়েছে এই অঞ্চলের জটিল টপোগ্রাফি যা উষ্ণায়নের প্রবণতা বোঝার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করেছে। গবেষকরা বলেছেন যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিবেচনা করে এই গবেষণায় বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের তত্ত্বগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে- পৃষ্ঠের উষ্ণতা এবং আর্দ্রতার মাত্রা। জাপানের মতো তাইওয়ানের পার্বত্য অঞ্চলগুলো মহাদেশীয় অঞ্চলগুলোর তুলনায় আর্দ্রতার কারণে উচ্চ জলবায়ু বেগের দ্বারা বেশি প্রভাবিত। তাছাড়া, স্কেলের পার্থক্যের কারণে বিশ্বব্যাপী তথ্যের উপর ভিত্তি করে স্থানীয়স্তরে ভবিষ্যদ্বাণী করা যাবে না। বিভিন্ন পার্বত্য অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন এবং স্থানীয় তথ্যের অনুপস্থিতির মানে এই নয় যে সেই এলাকায় তার প্রভাব লক্ষ করা যায়নি। তাই, বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বুঝতে এবং প্রজাতির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য পার্বত্য অঞ্চলে আরও আবহাওয়া কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + fourteen =