জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঢাকা শহরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঢাকা শহরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ অক্টোবর, ২০২৪

২১০০ সালের মধ্যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের ঢাকা শহরে ডায়রিয়াজনিত রোগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, এমনকি বিশ্ব উষ্ণায়ন ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে থাকলেও। লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশেনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ-এর গবেষকরা প্লস নেগলেক্টেড ট্রপিকাল ডিজিজ-এ গবেষণাটি প্রকাশ করেছেন। বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর হিসেবে পরিচিত ঢাকা শহরে ডায়রিয়াজনিত রোগের সংখ্যা অনেক বেশি। বাংলাদেশে আবহাওয়া কীভাবে ডায়রিয়াকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে পূর্বে বেশ কিছু গবেষণা দেখা গেলেও, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বিশেষ কোনো পরীক্ষা নেই।
শহরের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে জলের গুণমান সংক্রান্ত সমস্যা বেড়ে যায় এবং জনস্বাস্থ্যে তার প্রভাব বেশ ভীতিপ্রদ। নতুন গবেষণায়, গবেষকরা বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে বিভিন্ন ডায়রিয়াজনিত রোগের ঝুঁকি অনুমান করার চেষ্টা করেছেন। গবেষকরা ১৯৮১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ঢাকার একটি বড়ো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় ৩ মিলিয়ন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর তথ্য ব্যবহার করেন। তারা দেখার চেষ্টা করেন সে সময়ে ঢাকায় প্রতিদিনের বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা এর উপর কোনো প্রভাব ফেলেছিল কিনা। পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে দৈনিক তাপমাত্রা বেশি হলে তা সমস্ত বয়সী মানুষের মধ্যে ডায়রিয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলবে। গবেষকরা অনুমান করছেন পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৫ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উষ্ণ হলে, এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ ডায়রিয়াজনিত রোগের কারণে হাসপাতালে ভর্তির হার ৪.৫% থেকে ৭.৪% বৃদ্ধি পাবে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উপর বেশি প্রভাব পরতে পারে, এবং তাদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির হার ৫.৭% থেকে ৯.৪% বৃদ্ধি পাবে বলে সতর্ক করছেন গবেষকরা। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি- প্যারিস চুক্তির অধীনে দেশগুলো বিশ্ব উষ্ণায়নের লক্ষ্যমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নির্ধারণ করতে সম্মত হয়েছে। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা গেলেও ঢাকায় ডায়রিয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে শহরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে রোগ প্রতিরোধের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + ten =