জলবায়ুর ভারসাম্য পৃথিবী নিজেই রক্ষা করবে, তবে আমাদের খুশির কারণ নেই

জলবায়ুর ভারসাম্য পৃথিবী নিজেই রক্ষা করবে, তবে আমাদের খুশির কারণ নেই

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৯ নভেম্বর, ২০২২

দীর্ঘ সময়সীমার নিরিখে তাপমাত্রা আর জলবায়ুর অন্য মাপকাঠিগুলো পৃথিবী নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ভারসাম্যেও আনতে পারে। সেটা গড়ে মোটামুটি ১০০০০০ বছরের ব্যবধানে এমনিতেই হয়। তুষার যুগ, সৌর বিকিরণের ভোলবদল বা প্রচণ্ড আগ্নেয় সক্রিয়তা – এই সমস্ত নাটকীয় জলবায়ু পরিবর্তন পৃথিবী নিজেই সামলেছে। মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন পড়েনি মোটেই।
এটাকে ‘স্টেবিলাইজিং ফিডব্যাক’ বলা হয়। ৩.৭ বিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবী যে জীবন্ত রয়েছে তার প্রধান কারণ এটাই। গবেষক দলের অভিমত এমনই। এর আগেও এই তত্ত্বের কল্পনা করা হয়েছে, কিন্তু কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ আগে পাওয়া যায়নি।
ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির জলবায়ু বিশেষজ্ঞ কন্সট্যান্টিন আর্নশ্চেডট অবাক হয়ে বলছেন, এতসব নাটকীয় পটপরিবর্তন পৃথিবীর বুকে ঘটে যাওয়ার পরেও প্রাণের বিকাশের পথে কিন্তু কোনও ছেদ পড়েনি।
প্রধান কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করছেন সিলিকেট পাথরের ক্ষয়ের দিকটা। সিলিকেট পাথর যত ক্ষয়ে যেতে থাকে গভীরতর স্তরের খনিজ পদার্থগুলো বাইরের দিকে চলে আসে। ফলে পৃথিবীর বায়ুস্তরের বিভিন্ন গ্যাসের সাথে তাদের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। সিলিকেট যৌগরা বাতাসের কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে পাথরের মধ্যে ধরে রাখতে পারে অন্য যৌগিক পদার্থ হিসেবে।
বাতাসে উচ্চ পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি থাকলে সিলিকেট পাথরের ক্ষয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। সাথে সাথে বাতাসের গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর মাত্রা অনেকটাই কমে যায় রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে। সিলিকেটের ক্ষয়ের সময়সীমার সাথে স্পষ্ট সম্পর্ক রয়েছে তাপমাত্রা পরিবর্তনের সময়সীমা। সেটায় সময় লাগে মোটামুটি ৪০০০০০ বছর। জীবাশ্ম আর বরফের প্রাচীন স্তর থেকে এমনই বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সায়েন্স অ্যাডভান্সেস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − 1 =