জলবায়ুর হাল ফেরাতে সহায় পুরাতন কৃষি পদ্ধতি

জলবায়ুর হাল ফেরাতে সহায় পুরাতন কৃষি পদ্ধতি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৪ মে, ২০২৩

খাদ্যশস্যের বৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করতে মরগ্যান রুয়েল ইথিওপিয়ার পাহাড়ি এলাকায় বহুদিন ছিলেন। সেই সময়েই তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে একটা অদ্ভুত শস্যের গল্প শোনেন। কৃষিবিজ্ঞানী রুয়েল বেশ বিড়ম্বনায় পড়ে গিয়েছিলেন।
ইথিওপিয়ার আমহারিক ভাষায় ফসলের নাম ‘দুরাগ্না’। ইংরেজিতে কোনও প্রতিশব্দ নেই এটার। রুয়েল প্রাথমিক পরীক্ষার পর দ্বিধায় ছিলেন। তাঁর ভাষায়, ঐ ফসল ঠিক গমের মতোও নয় আবার বার্লির মতোও নয়। বেশ কয়েক সপ্তাহ এই শস্যের রহস্য রুয়েলকে ধন্দে রেখেছিল।
তারপরে স্থানীয় এক চাষির মুখে রুয়েল আসল বিষয়টা জানতে পারেন। ঐ ‘অদ্ভুত’ শস্য নাকি গম, বার্লি এমনকি অন্য একাধিক দানাশস্যের মিশ্রণ। একইসাথে বীজ বুনতে হয়। অর্থাৎ একই সারিতে নির্দিষ্ট একটা শস্যের বীজ না বসিয়ে একাধিক আলাদা আলাদা বীজ বোনা। রুয়েল অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এটা দেখে যে পৃথিবীর কোনও কোনও প্রান্তে এখনও প্রাচীন ঐ কৃষি ব্যবস্থা টিকে রয়েছে। যেখানে খাদ্যশস্যের একাধিক প্রজাতি মিশ্রিত অবস্থায় চাষ করা হয়। মিশ্রিত বীজগুলোকে বলে ‘মাসলিন’। তাতে ধান, গম, জোয়ার, বাজরা, বার্লি সবই থাকে।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা রুয়েলের অভিজ্ঞতা নিয়ে সম্প্রতি গবেষণাপত্র লিখেছেন। শুধু তা’ই নয়, সেই পুরাতন পদ্ধতি হাতেকলমে প্রয়োগ করে কিছুটা সাফল্যও তাঁরা পেলেন। এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসল থেকেই কিন্তু আদিম মানুষ কয়েক হাজার বছর ধরে খাদ্যশস্যের চাহিদা জুগিয়ে এসেছে। গবেষকরা বলছেন, পরিবর্তিত জলবায়ুতে এবং অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে এই পুরাতন পদ্ধতি ‘একফসলি’ পদ্ধতির তুলনায় বেশি কার্যকরী হতে পারে।