জলের অণু থেকে জলের অণু পৃথক করার কৃতিত্ব!

জলের অণু থেকে জলের অণু পৃথক করার কৃতিত্ব!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১১ নভেম্বর, ২০২২

চীন আর জাপানের গবেষকদের একটা দল জল থেকে জল পৃথক করার কেরামতি আবিষ্কার করলেন! যদিও পাগলের প্রলাপ শোনাচ্ছে, তবুও আণবিক স্তরে এই নড়াচড়া করার গোটা প্রক্রিয়াটা খুবই সূক্ষ্মতার ব্যাপার।
নেচার পত্রিকায় গবেষকরা তাঁদের কাজের খতিয়ান প্রকাশ করলেন। নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর আর ওষুধ উৎপাদন শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠতে পারে নতুন এই আবিষ্কার।
জলের মধ্যে খুবই সামান্য অনুপাতে হাইড্রোজেন পরমাণুর অন্য আইসোটোপ থাকে। সেটার ভর সাধারণ হাইড্রোজেনের তুলনায় কিছুটা বেশি। একে বলে ডয়টেরিয়াম। জলের অণুতে ডয়টেরিয়ামের উপস্থিতি থাকলে সেটাকে ‘ভারি জল’ বলা হয়।
এই ভারি জল নিউক্লীয় বিক্রিয়ক, মেডিকেল ইমেজিং আর অন্যান্য বিশ্লেষক পদ্ধতিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। D2O, HDO, H2O এই প্রত্যেকটা জলের অণুরই গঠন সমান কিন্তু তাদের ভর আলাদা। এদের আইসোটোপোলগস বলে। সাউথ চায়না ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানী ছেং গু বলছেন, জলের আইসোটোপোলগ পৃথক করার কাজটা খুবই শক্ত কারণ তাদের রাসায়নিক চরিত্র প্রায় সমান।
তামা আর কার্বন-ঘটিত পলিমার দিয়ে তৈরি একটা ছিদ্রালু ক্রিস্টাল পদার্থ। এই বিশেষ পদার্থের সৌজন্যেই গবেষকরা জলের অণু পৃথক করার অসাধ্যসাধন করতে পেরেছেন। যখন গরম করা হয়, পদার্থের কার্বন-নির্মিত অংশটা বাইরে থেকে অণু প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য খুলে যায়। আর ঐ ছিদ্রালু পদার্থের ভেতরে অন্য বিজাতিয় অণু ঢুকতে বা বেরোতে পারে। কিন্তু পদার্থটাকে ঠাণ্ডা করা হলে ভেতরে থাকা অণুগুলো আর কিন্তু নড়তে চড়তে পারে না।
এই কেরামতিতেই সাধারণ জলের অণু খুব দ্রুত ঐ পদার্থ দ্বারা শোষিত হয়, কিন্তু অন্য দুটো আইসোটোপোলগস বাইরে পড়ে থাকে। যেহেতু তারা খুব ধীরে ধীরে শোষিত হয়। ফলে সহজেই তাদের পৃথক করে নেওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =