জলে প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক মুক্তি

জলে প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক মুক্তি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৯ জুন, ২০২৫

আপনার জলের গ্লাসে অদৃশ্য প্লাস্টিক ভাসছে! বিজ্ঞানীরা বলছেন – প্রতিটা কলের জল এমনকি বোতলজাত জলে, মাইক্রো(ক্ষুদ্র) ও ন্যানো (অতিক্ষুদ্র) প্লাস্টিক হাজারে হাজারে ঘুরে বেড়ায়।এই ক্ষুদ্র প্লাস্টিক শরীরে ঠিক কী প্রভাব ফেলে, তা এখনও গবেষণার বিষয়। কিন্তু আমরা কেউই প্লাস্টিক খেতে চাই না। তাই আশার আলো, চীনের গুয়াংঝু-র রসায়নবিদ ঝানজুন লি ও এডি জেং -এর আবিষকৃত এক পন্থা, যা অতি সাধারণ। সোজাসুজি জল গরম করা। জল যদি “খর” হয় (মানে ক্যালসিয়াম যুক্ত হয়), তবে সেটি ফুটলেই তৈরি হয় ক্যালসিয়াম কার্বনেটের খোসা। এই খোসাগুলিই অতিক্ষুদ্রাকার প্লাস্টিকের চারপাশে আঁকড়ে ধরে তাকে নীচে টেনে নিয়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু পাঁচ মিনিট জোরে ফোটালেই স্টাইরিন, পলিথিন ও পলিপ্রোপিলিন জাতীয় প্লাস্টিকের অন্তত ৮০% ধরা পড়ে এই খোসার জালে। খর জলে এই সংখ্যাটা পৌঁছে যায় ৯০%-এ। আমেরিকায় জলকণায় প্রতি লিটারে ক্যালসিয়াম থাকে প্রায় ৩০০ মিলিগ্রাম। সেখানে গবেষণার ফল আরও ভালো। তবে মৃদু জল (অপেক্ষাকৃত কম ক্যালসিয়ামযুক্ত) এলাকাতেও অন্তত ২৫% প্লাস্টিক সরানো যায় জল ফুটিয়েই। চাইলে এক চিমটি খাবার চুনও মেশাতে পারেন। প্লাস্টিক ধরা জলকে পরে চায়ের ফিল্টারে ছেঁকে নিলেই তা হয় পরিষ্কার। জল ফোটানোর পাত্রের তলায় যে সাদা স্তর পড়ে, সেটি নিয়মিত পরিষ্কার করলেই সমস্যা থাকে না। মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কবাণী দিয়েছে ইতিমধ্যেই। আর গুয়াংঝুর এই গবেষণা প্রমাণ করে, বড় সমস্যার সমাধানে সবসময় বড় প্রযুক্তিই লাগে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + 20 =