ইতিহাস যা বলে। যীশুর জন্মের ১০ হজার বছর আগে, নবপ্রস্তর যুগের মানবসভ্যতা প্রথমবারের জন্য শুধুমাত্র শিকার করে নিজের আহারের ব্যবস্থা ছেড়ে কৃষিকাজে মন দিয়েছিল। পূর্বে মিশর থেকে পশ্চিমে ইরান-এই অঞ্চলটিকে সেই সময় বলা হত ‘উর্বর ক্রিসেন্ট’। এখানেই শুরু হয়েছিল নবপ্রস্তরযুগের মানুষের কৃষিকাজ। পরবর্তীকালে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভৌগলিক সীমানা ছাড়িয়ে সেই কৃষিকার্যের ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে। পরবর্তী দুশো, তিনশো বছরে চাষবাষের কাজ ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপ, এশিয়ায়।
কিন্তু প্রথম চাষী কারা ছিলেন? আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সেল’-এ প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, জার্মানি আর সুইৎজারল্যান্ড থেকে জিনতত্ববিদদের একটি দল নিওলিথিক বা নবপ্রস্তর যুগের চাষীদের জিন সংগ্রহ করে সেগুলোকে বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছেন কারা ছিল কৃষিকার্যের পথিকৃৎ। ইউরোপ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া থেকে জিনতত্ত্ববিদদের দলটি ১৫ নবপ্রস্তর যুগের মানুষের জিন সংগ্রহ করেছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন ১৩ জন চাষী আর দু’জন শিকারি। তার আগে তারা লুক্সেমবার্গ আর ইরান থেকেও ১০ জন নিওলিথিক ব্যক্তির জিন সংগ্রহ করেছিলেন। তার মধ্যে ছিলেন ৬ জন চাষী আর ৪ জন শিকারি। বিশ্লেষণের পর জিনতত্ত্ববিদদের দলটি জানিয়েছে প্রাথমিকভাবে তাদের মনে হয়েছে গ্রীস এবং উত্তর তুরস্কের মানুষের হাতেই শুরু হয়েছিল নবপ্রস্তর যুগের প্রথম ফার্মিং। তাদের তখন বলা হত এজিয়ান ফার্মারস। জর্ডন, ইস্রায়েল এবং লেবাবনও এই বিজ্ঞানীদের তালিকায় পিছিয়ে নেই। জিনতত্ত্ব বলছে এই দেশের চাষীদেরও এজিয়ান ফার্মারস বলা হত।