জিভ বের করুন, কম্পিউটার রোগ বলে দেবে

জিভ বের করুন, কম্পিউটার রোগ বলে দেবে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৮ আগষ্ট, ২০২৪
জিভ বের করুন, কম্পিউটার রোগ বলে দেবে

ডাক্তার দেখাতে গেলে ডাক্তারবাবু বলেন, জিভ বের করুন। উনি কী দেখেন? কম্পিউটার অ্যালগরিদম মানুষের জিভের রঙ বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন রোগের পূর্বাভাস দিতে পারছে। আর এই পূর্বাভাস ৯৮% ক্ষেত্রে নির্ভুল হচ্ছে। ইরাকি এবং অস্ট্রেলিয়ান গবেষকদের প্রস্তাবিত এই ইমেজিং সিস্টেম ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, অ্যানিমিয়া, হাঁপানি, লিভার এবং গলব্লাডারের অবস্থা, কোভিড-19, তার সাথে আরও নানা রকম ভাস্কুলার এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা নির্ণয় করতে পারছে। মিডল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি (এমটিইউ) এবং ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ অস্ট্রেলিয়া (ইউনিএসএ) এর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষকরা এ নিয়ে ধারাবাহিক পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেছেন। তারা ৫২৬০ টা চিত্র ব্যবহার করে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যাতে কম্পিউটার জিভের রঙ শনাক্ত করতে পারে।
মধ্য প্রাচ্যের দুটো হসপিটাল, বিভিন্ন ধরনের রোগীদের জিভের মোট ৬০ টা চিত্র পাঠান। প্রায় সব ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জিভের রঙ দেখে রোগ শনাক্ত করতে পারে। টেকনোলজিসে প্রকাশিত পেপারে গবেষকরা জানান কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাথে সাথে রোগ নির্ধারণ করছে। মজার বিষয় হল চিনে ২০০০ বছর আগে জিভ দেখে রোগ শনাক্ত করার প্রথা ছিল। আর বর্তমান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তার অনুকরণেই রোগ নির্ণয় করছে। এ বিষয়ে গবেষকরা জানান যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের জিভের রঙ হলুদ হয়, ক্যান্সারের রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে বেগুনি বর্ণের জিভ আর তাতে চটচটে প্রলেপ থাকে, যারা মারাত্মক স্ট্রোকের শিকার তাদের আস্বাভাবিক লাল রঙের জিভ দেখা যায়। সাদাটে জিভ অ্যানিমিয়ার লক্ষণ, যারা মারাত্মকভাবে কোভিড-19 এর শিকার হয়েছিলেন, তাদের জিভ গাঢ় লাল রঙের হয়। অ্যাজমা রোগী বা পরিপাক তন্ত্রের সমস্যায় জিভের রঙ নীলচে হয়ে থাকে। রোগীদের জিভের ২০ সেন্টিমিটার ওপরে ক্যামেরা ধরে তাদের রোগ সাথে সাথে নির্ধারণ করা হচ্ছিল। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি নিরাপদ, রোগীদের জন্য ব্যবহার করা সহজ আর বেশ কার্যকারী। তারা জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতে স্মার্টফোন ব্যবহার করে রোগ নির্ধারণ করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + one =