ঝাড়খণ্ডে শকুন রেস্তোঁরা স্থাপন

ঝাড়খণ্ডে শকুন রেস্তোঁরা স্থাপন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪

অতীতে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে প্রচুর শকুন দেখা যেত। স্ক্যাভেঞ্জার হিসেবে পরিচিত এই পাখি প্রাণীর মৃতদেহ খেয়ে পরিবেশ পরিষ্কার রাখে। কিন্তু বর্তমানে কোডারমা, হাজারিবাগের কিছু অঞ্চল বাদে এই পাখির দেখা মেলেনা। বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনের তফসিল (1) এর অধীনে শকুন সুরক্ষিত প্রজাতি এবং এদের হোয়াইট-ব্যাকড এবং লং-বিলড এমন দুটি প্রজাতি যাদের ‘অত্যন্ত বিপন্ন’ হিসাবে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN) এর রেড ডেটা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শকুন সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এরা প্রাণীর মৃতদেহ খেয়ে পরিবেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ইন্ডিয়ান বার্ড কনজারভেশন নেটওয়ার্ক (আইবিসিএন) এর ঝাড়খণ্ড সমন্বয়কারী, জানিয়েছেন যে সাম্প্রতিক অতীতে কিছু উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ঝাড়খণ্ডে শকুনের সংখ্যা বেড়েছে। এখানে বর্তমানে ছয় প্রজাতির শকুন দেখা যাচ্ছে যাদের বর্তমান জনসংখ্যা ৪৫০-৫০০-এর মধ্যে। বহু বছর ধরে এই অঞ্চলে শকুনের জনসংখ্যা ২৫০-৩০০-এর বেশি ছিল। এই স্ক্যাভেঞ্জার পাখিদের একটি নিরাপদ আবাস দেওয়ার লক্ষ্যে ঝাড়খণ্ড বন বিভাগ ইতিমধ্যে হাজারিবাগের কেন্দ্র থেকে ১০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধকে নিরাপদ অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করেছে। এখন হাজারীবাগ জেলায় বেশ কিছু বিরল প্রজাতির শকুনের দেখা মিলছে। কোডারমার টিলাইয়া নগর পরিষদের অধীনে গুমোতে এক হেক্টর জমিতে ‘শকুনদের জন্য রেস্তোরাঁ’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে এই পাখিদের খাওয়ানো হবে। এরপর চান্দওয়ারা ব্লকে এই ধরনের আরেকটি রেস্তোঁরা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এই শকুন রেস্তোরাঁ শকুন প্রজাতির ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা বাড়ানোর একটি প্রচেষ্টা। খাওয়ানোর জায়গায় বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে যাতে কুকুর বা শেয়ালের মতো অন্যান্য প্রাণী প্রবেশ করতে না পারে এবং মৃতদেহ খেয়ে যেতে না পারে। কোডারমাতে যে শকুন রেস্তোঁরা বা গিদ্দা ভোজনালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানে শকুনদের মৃতদেহ খাওয়ানোর আগে গোশালা ও পৌরসভার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করা হচ্ছে। গোশালা থেকে যে মৃত গরু আসবে ও পৌরসভা এলাকা থেকে যে মৃতদেহ শকুনের খাওয়ার জন্য আনা হবে সেগুলো যেন ডাইক্লোফেনাক বা অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান থেকে মুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে শকুনের সংখ্যা নির্ধারণ ও উদ্ধার কেন্দ্রের জন্য এই পাখিদের জিও-ট্যাগিং প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য প্রথম ‘শকুন রেস্তোরাঁ’ ২০১৫ সালে মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার ফাঁসাদ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে পশ্চিম ঘাটে শকুন ছানা অনাহারে মারা যাওয়ার ভিডিও পোস্ট হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। একই রাজ্যে গধচিরোলিতে আরও চারটি এবং নাসিক জেলার হারসুলেও একটি রেস্তোঁরা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + nineteen =