১৯ টি উচ্চ-আয় সম্পন্ন দেশের উপর করা গবেষণা থেকে প্রকাশ পেয়েছে যে টাইপ ২ ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পর আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে, এবং যাদের ৫০ বছর বয়সে ডায়াবেটিস নির্ণয় করা হয়েছে তাদের সম্ভাব্যভাবে ছয় বছর জীবনকাল হ্রাস পেতে পারে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন কারণ যেমন স্থূলতা, খাদ্যাভ্যাস এবং নিষ্ক্রিয়তার ফলে স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। গবেষকরা প্রতিরোধ কৌশলের উপর প্রয়োজনীয় গুরুত্ব আরোপ করতে বলেছেন এবং বলেছেন যে এই রোগে তাড়াতাড়ি আক্রান্ত হলে আয়ু হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক দল সতর্ক করেছে যে ৩০ বছর বয়সে টাইপ ২ ডায়াবেটিস ধরা পড়া একজন ব্যক্তির আয়ু ১৪ বছর পর্যন্ত কমতে পারে।
স্থূলত্বের ক্রমবর্ধমান মাত্রা, ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস এবং দিনের বেশিরভাগ সময় বসে থাকা বিশ্বব্যাপী টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্রুত বৃদ্ধি করছে। ২০২১ সালে, বিশ্বব্যাপী ৫৩৭ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে অনুমান করা হয়েছিল, এবং অল্প বয়সীরা এই রোগে আরও বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা এবং ক্যান্সার সহ বিভিন্ন জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পূর্ববর্তী গবেষণা থেকে জানা গেছে যে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্করা ডায়াবেটিস নেই এমন প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় গড়ে ছয় বছর আগে মারা যায়। তবে, নির্ণয়ের সময় বয়স অনুসারে আয়ুষ্কালের এই গড় হ্রাস কীভাবে পরিবর্তিত হয় সে সম্পর্কে অনিশ্চয়তা রয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন যে ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত আয়ু হ্রাসের বেশিরভাগই ছিল ‘ভাস্কুলার ডেথ’ যেমন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অ্যানিউরিজমের মতো অবস্থার কারণে মৃত্যু। ক্যান্সারের মতো অন্যান্য জটিলতার কারণেও আয়ু কমতে পারে। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক নাভিদ সাত্তার বলেছেন যে গবেষণা থেকে এটা স্পষ্ট যে একজন ব্যক্তি যদি কম বয়সে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় তবে তার বিপাকীয় ক্রিয়া থেকে তার শরীরের আরও বেশি ক্ষতি হয়। কিন্তু যদি আগে এই রোগের সনাক্তকরণ হয় এবং সময় মতো শরীরের গ্লুকোজের মাত্রার নিয়ন্ত্রণ করা যায় তবে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা প্রতিরোধে তা সাহায্য করতে পারে।