স্তন্যপায়ী প্রাণীরা যখন ঠান্ডার সংস্পর্শে আসে তখন শরীর নিজের শক্তি পুড়িয়ে তার স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখে। সক্রিয় ভাবে এই শক্তি ব্যয়ের জন্য ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় ফলে খাওয়া বৃদ্ধি পায়। এটা নিয়ন্ত্রণ করার নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অজানা ছিল। নতুন গবেষণায়, ১৬ই আগস্ট, ২০২৩-এ নেচারে রিপোর্ট করা হয়েছে, গবেষকরা ইঁদুরের মস্তিষ্কে নিউরনের একটি ক্লাস্টার চিহ্নিত করেছেন যা ঠান্ডার সঙ্গে সম্পর্কিত, খাদ্য-সন্ধানী আচরণের জন্য “সুইচ” হিসাবে কাজ করে। আবিষ্কারটি বিপাকীয় স্বাস্থ্য এবং ওজন হ্রাসের জন্য সম্ভাব্য থেরাপিউটিকস হতে পারে। এটি স্তন্যপায়ী প্রাণীদের একটি মৌলিক অভিযোজিত প্রক্রিয়া এবং ভবিষ্যতের চিকিত্সার সাথে এটিকে যুক্ত করতে পারলে ঠাণ্ডার ফলে বা অন্যান্য ধরণের চর্বি হ্রাস করার জন্য বিপাকীয় সুবিধাগুলো পাওয়া যেতে পারে।
হোল ব্রেন ক্লিয়ারিং এবং লিইট শীট মাইক্রোস্কোপি ব্যবহার করে, গবেষকরা ঠান্ডা বনাম উষ্ণ পরিস্থিতিতে মস্তিষ্ক জুড়ে নিউরনের কার্যকলাপের তুলনা করে দেখেছেন, ঠাণ্ডায় মস্তিষ্ক জুড়ে বেশিরভাগ নিউরোনাল কার্যকলাপ অনেক কম থাকলেও থ্যালামাস অঞ্চলের অংশগুলোর সক্রিয়তা বেশি। গবেষকের দলটি মিডলাইন থ্যালামাসের জিফয়েড নিউক্লিয়াস নামক নিউরনগুলোর একটি নির্দিষ্ট ক্লাস্টারে প্রবেশ করে দেখেন যে এই নিউরনের কার্যকলাপ ঠান্ডা পরিস্থিতিতে বৃদ্ধি পায় যা ইঁদুরের ঠান্ডা-প্ররোচিত জড়তা কাটিয়ে খাবারের সন্ধানের জন্য তাদের প্ররোচিত করে। তারা দেখেন ঠান্ডা অবস্থার শুরুতে যখন কম খাবার পাওয়া যেত, তখন জিফয়েড নিউক্লিয়াসের কার্যকলাপ আরও বেশি ছিল। তারা বলেন যে এই নিউরনগুলি ঠাণ্ডায় সাড়া দেওয়ার পরিবর্তে ঠাণ্ডা-প্ররোচিত শক্তির ঘাটতিতে সাড়া দেয়। গবেষকরা যখন কৃত্রিমভাবে এই নিউরনগুলো সক্রিয় করেছিলেন, তখন ইঁদুররা তাদের খাদ্য-সন্ধান বৃদ্ধি করেছিল, কিন্তু অন্যান্য কার্যকলাপবৃদ্ধি পায়নি। যখন গবেষকরা এই নিউরনগুলোর কার্যকলাপে বাধা দেয়, তখন ইঁদুরেরর খাদ্য-সন্ধানী প্রবণতা হ্রাস পায়। এই প্রভাব শুধুমাত্র ঠাণ্ডা অবস্থায় উপস্থিত থাকে, যা বোঝায় যে ঠান্ডা তাপমাত্রা ক্ষুধা পরিবর্তনের জন্য একটি পৃথক সংকেত প্রদান করে।
শেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেটে, গবেষকরা দেখিয়েছেন এই জিফয়েড নিউক্লিয়াস নিউরনগুলো নিউক্লিয়াস অ্যাকম্বেন্স নামে মস্তিষ্কের একটা অঞ্চল নির্দেশিত করে, যে এলাকা দীর্ঘদিন ধরে খাওয়ার আচরণ সহ আচরণকে পুরস্কার ও তিরস্কারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পরিচিত।