ঠিক কীভাবে চলাফেরা করে ব্যাকটেরিয়া?

ঠিক কীভাবে চলাফেরা করে ব্যাকটেরিয়া?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ অক্টোবর, ২০২২

ব্যাকটেরিয়া আর তাদের প্রাচীন শত্রু আর্কিয়া কেমনভাবে নড়াচড়া করে? – এ প্রশ্ন আজকের নয়, পঞ্চাশ বছরের পুরনো সমস্যা জীববিজ্ঞানীদের।
ফ্ল্যাজেলাম নামক একটা ছোট্ট গোটানো ল্যাজের সাহায্যেই অণুজীব এগোতে বা পিছতে পারে। এ তথ্য আগেই জানা গেছে। কিন্তু কোন উপায়ে অংশুল এই উপাঙ্গ কোঁচকানো আকার ধারন করে সামনে ঠেলে নিয়ে যেতে পারে ব্যাকটেরিয়াকে – সেটা মোটেই জানা ছিল না।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবপদার্থবিদ মার্ক ক্রুটসবার্জার ও তাঁর দল ব্যবহার করেছিলেন ক্রায়ো-ইলেক্ট্রন টোমোগ্রাফি। একেবারে পারমাণবিক স্তরে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে ব্যাকটেরিয়া এবং এককোষী জীবের ফ্ল্যাজেলা। নমুনা হিসেবে ইশ্চেরিয়া কোলাই ব্যাকটেরিয়া আর স্যাকারোলোবাস আইল্যান্ডিকাস নামের আর্কিয়াকে নেওয়া হয়েছিল। দেখা গেছে এককোষী জীবদেহের শেষপ্রান্তে একক প্রোটিন দিয়ে তৈরি ফিলামেন্টই তাদের চলাফেরায় মুখ্য ভূমিকা নেয়। ছোট্ট ল্যাজের মতো উপাঙ্গকে প্রপেলারের মতো কাজে লাগাতে পারে এই অণুজীব। নানা রকমের তরঙ্গ তৈরি করে ইচ্ছে মতো যে কোনও দিকে তারা ঘোরাফেরা করে।
প্রোফেসর মার্ক অবাক হয়ে গেছে আরও একটা বিষয় লক্ষ্য করে। ব্যাকটেরিয়া আর আর্কিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন জীবগোষ্ঠীর সদস্য হলেও ফ্ল্যাজেলামের কাজ কিন্তু একইরকম। যদিও গঠনগত প্রোটিনে বিস্তর ফারাক আছে। গবেষকরা ব্যাপারটাকে কনভারজেন্ট এভোলিউশান বা অভিসারী বিবর্তন বলছেন। অর্থাৎ একেবারেই আলাদা দুটো জীব একই সমস্যার সমাধান করতে প্রায় একই উপায়ে অভিযোজিত হয়েছে বিবর্তনের পথে। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবরসায়নবিদ এডওয়ার্ড ইগেলম্যান উদাহরণ দিয়ে বলছেন, পাখী বাদুড় বা মৌমাছি পৃথক প্রাণী হলেও ওড়ার দরকারে তারা ডানা পেয়েছে বিবর্তনের দ্বারাই।
সেল পত্রিকায় প্রকাশিত হল নতুন এই গবেষণাপত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × four =