ডায়েট পানীয় খাচ্ছেন- ভেবে দেখেছেন কী?

ডায়েট পানীয় খাচ্ছেন- ভেবে দেখেছেন কী?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩০ জুলাই, ২০২৪
ডায়েট-পানীয়

অনেকেই ওবেসিটি থেকে বাঁচতে বা ওজন বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে ঠান্ডা পানীয় বাদ দিয়েছেন। তবে কেউই প্রায় প্রাণে ধরে ছেড়ে দিতে পারেননি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঠান্ডা পানীয়র জায়গায় আজ প্রবেশ করেছে ডায়েট সফট ড্রিঙ্ক। এতটাই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছে আমাদের জীবনে যে এই বস্তুটি আমাদের নিয়মিত বর্জ্য জলে শনাক্ত করা হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কপালে তাই চিন্তার ভাঁজ। দীর্ঘদিন ধরে এই পানীয় পান করলে স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভব পড়তে পারে। এমন কথাই জানাচ্ছে গবেষণা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুসারে দৈনিক শর্করার পরিমাণ মোট শক্তি গ্রহণের তুলনায় ১০% কমিয়ে দিতে হবে। তবে তা আরও ৫% কমিয়ে যদি ২৫ গ্রাম বা ছয় চা চামচ করা যায় স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে। বেশিরভাগ সফট ড্রিঙ্কে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। কোকা-কোলার একটি সাধারণ ৩৩৫ মিলিলিটার ক্যানে কমপক্ষে সাত চা চামচ চিনি থাকে। অন্যদিকে
ডায়েট সফট ড্রিঙ্কের স্বাদ অনেকটা সাধারণ সফট ড্রিঙ্কের মতোই তবে এতে চিনি নেই। বদলে এই ধরনের পানীয়তে রয়েছে কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক সুইটনার বা মিষ্টি। যেমন- অ্যাসপার্টাম, স্যাকারিন এবং সুক্রলোজ। প্রাকৃতিক সুইটনারের মধ্যে রয়েছে স্টেভিয়া এবং মঙ্ক ফ্রুটের নির্যাস। কৃত্রিম মিষ্টি চিনির চেয়ে অনেক বেশি মিষ্টি তাই একই রকম মিষ্টতা দেওয়ার জন্য পরিমাণে অনেক কম প্রয়োজন। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে ডায়েট সফট ড্রিঙ্ককে সাধারণ কোমল পানীয়ের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসাবে বিপণন করা হয়, বিশেষ করে তাদের জন্য যারা চিনি খাওয়া কমাতে চান বা ওজন কমাতে চান। গবেষকরা জানান যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়েট সফট ড্রিঙ্ক বেশিমাত্রায় পান করেন তাদের বিপাকীয় ক্রিয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ। ২০২৩ সালে ডব্লিউএইচও ঘোষণা করেছে যে ডায়েট সফট ড্রিঙ্কে ব্যবহৃত প্রধান মিষ্টি অ্যাসপার্টাম সম্ভবত মানুষের জন্য কার্সিনোজেনিক, অর্থাৎ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী। গবেষকরা আরও জানান প্রায় ৮২ হাজার মানুষের উপর গবেষণা করে দেখা গিয়েছে ওজনে হ্রাস টানতে সাধারণ ঠান্ডা পানীয় ছেড়ে ডায়েট পানীয়ে আস্থা রাখলে তাতে হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। দিনে দুই বা তার বেশি ডায়েট কোক খেলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পায়।এখানেই শেষ নয়। ক্ষতির বহর বাড়ে বই কমে না। এই ডায়েট পানীয়কে সংরক্ষণের উদ্দেশে প্রিজারভেটিভ যোগ করা থাকে। ফলে এই সব ক্ষতিকর উপাদান থেকে অ্যালজাইমার্সের মতো অসুখও হানা দিতে পারে। এছাড়াও হতে পারে দাঁতের ও মাড়ির ক্ষতি। তাই এরপর থেকে ডায়েট পানীয় মুখে তোলার আগে একবার ভেবে দেখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − three =