এবছরও দিল্লিতে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ গুরুতর, বলছেন চিকিৎসকরা। ২০২০-তে ছিল কোভিডের আলফা ভ্যারিয়ান্টের আক্রমণ। এবছর ডেল্টা। কিন্তু জার্নাল সায়েন্সে এই সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের এই বিষয় নিয়ে করা একটি গবেষণা। সেখানে বলা হয়েছে, ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের এই মুহুর্তে আক্রমণের লক্ষ্য কোভিড-১৯ হয়ে সুস্থ হয়ে টীকা নেওয়া মানুষ! তার জন্য ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট ভাইরাস আবার নতুন এক রূপ ধরেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন রূপ ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টকে ধরতে হয়েছে। কারণ, দিল্লিতে থাকা বাসিন্দাদের বিরাট এক অংশের মধ্যে সংক্রমণই রূপান্তরিত হয়েছে ‘ইমিউনিটিতে’! যাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘হার্ড ইমিউনিটি’।
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০২০-র আলফা ভ্যারিয়ান্টের তুলনায় ২০২১-এর ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টে ভাইরাস ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত মানুষের শরীরে ঢুকে পড়তে পারে। পারে নয়, পেরেছে।
২০২০-র জুন থেকে নভেম্বরের মধ্যে দিল্লিতে কোভিডে সংক্রমণ ছিল চোখে পড়ার মত। কিন্তু এবছর মার্চ-এপ্রিলের ছবিটা ভয়ঙ্কর হয়ে পড়ে। দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা দু’হাজার দিয়ে শুরু হয়েছিল মার্চের গোড়ায়। এপ্রিলে সেই সংখ্যাটা চলে গিয়েছিল দৈনিক ২০ হাজারে! হাসপাতালগুলোয় জেনারেল বেড থেকে আইসিইউ-কোনও বিছানাতেই জায়গা ছিল না। তারপর থেকে সেটা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজ, ডেনমার্কের কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়-তার সঙ্গে দিল্লির ন্যাশনাল সেন্টার অফ ডিজিস কন্ট্রোলের বিজ্ঞানীরা সমবেতভাবে এই গবেষণা করেছেন। লেখা হয়েছে দিল্লির সামগ্রিক সেরোপজিটিভিটি ৫৬.১ শতাংশ। মানে, বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা দৈনিক সংক্রমণের হার আপাতদৃষ্টিতে যে কম দেখাচ্ছে ছবিটা আসলে সেটা নয়। দিল্লির বাসিন্দাদের এক বিশাল সংক্রামিত অংশ ইমিউনিটিতে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছে!
এই গবেষণা কিন্তু ভারতবাসীর কাছে দুঃসংবাদ হতে পারে। গবেষকরা উদ্বিগ্ন যে দিল্লিতে সংক্রমণ নিঃশব্দে বাড়ছে। তারা বলেছেন, “হার্ড ইমিউনিটিতে কিন্তু আউটব্রেক কমানো যাবে না। বরং হার্ড ইমিউনিটি না বেড়ে যদি মানুষ ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টে সংক্রামিত হত তাহলে চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করা যেত। এছাড়া ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টকে প্রতিরোধ করার উপায় বুস্টার ডোজ দেওয়া।”