নাইটিইস্ট রিজ, জলের নীচে পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বতমালা। ভারত মহাসাগরের ৯০-ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ বরাবর ৫০০০ কিমি প্রসারিত এবং উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতমালার দৈর্ঘ্যের সঙ্গে প্রায় সমান এই জলমগ্ন পর্বতমালা। কার্টিন ইউনিভার্সিটির গবেষণায় এই পর্বতমালার গঠন প্রক্রিয়া থেকে পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটের গতিবিধি সম্পর্কে জানা গেছে। কার্টিনের স্কুল অফ আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সেসের সহ-লেখক ডঃ হুগো অলিরুক বলেছেন এই রিজের থেকে খনিজ নিয়ে তার প্রায় নির্ভুল ডেটিং করে জানা গেছে, এটা ৮ কোটি ৩০ লাখ থেকে ৪কোটি ৩০ লাখ বছর আগে বিশাল আগ্নেয়গিরির শৃঙ্খল হিসাবে গঠিত হয়েছিল। উত্তরদিকে এর প্রাচীনতম অংশগুলো ভারতের কাছাকাছি রয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে, পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটগুলি কীভাবে সরেছে, পুনরায় সজ্জিত হয়েছে তার মডেল তৈরি করতে নাইনটিইস্ট রিজের মোটামুটি আনুমানিক বয়স ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, নির্ভুল ডেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আগের মডেলগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে পরিমার্জন করা যায়। এর থেকে প্রাচীন মহাদেশীয় স্থলভাগ কীভাবে কতটা সরেছে তা সম্পর্কে জানা যায়।
বেশিরভাগ আগ্নেয়গিরির হটস্পটগুলো ম্যান্টলে আবদ্ধ অবস্থায় থাকে যখন টেকটোনিক প্লেটগুলি এগুলোর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন আগ্নেয়গিরি নির্গমনের পথ তৈরি হয়। এই গবেষণায় দেখা গেছে যে নাইনটিইস্ট রিজ গঠিত হওয়ার জন্য দায়ী হটস্পট সময়ের সাথে সাথে ম্যান্টলের মধ্যে কয়েকশ কিলোমিটার সরে গেছে। এই ধরনের হটস্পটের নড়াচড়া বেশ সাধারণ হলেও, এই নড়াচড়ার প্রমাণ পাওয়া কঠিন। এই ধরনের নড়াচড়ার প্রমাণ প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু হটস্পটের ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে। তবে ভারত মহাসাগরে টেকটনিক প্লেট সরে যাওয়ার এটাই প্রথম নথিভুক্ত প্রমাণ। এই নতুন মডেল থেকে যেমন এই পর্বতমালার বয়সের হিসেবে পরিবর্তন করা গেছে, তেমনই টেকটোনিক প্লেটের গতিবিধি জানা গেছে।