ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) এক নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, গত এক দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘র্যাবিট ফিভার’-এর সংক্রমণ বাড়ছে। চিকিৎসকেরা অবশ্য এই রোগকে ডাকে টিউলারেমিয়া নামে। মূলত ফ্রান্সিসেলা টুলারেনসিস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এই রোগের সংক্রমণ ঘটে। মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণী, সকলের শরীরেই থাবা বসাতে পারে এই সংক্রমণ। এই সংক্রমণ মূলত বেশি ছড়ায় খরগোশ, ইঁদুর বা তীক্ষ্ণদন্তী ইঁদুর জাতীয় প্রাণীদের মধ্যে। তবে এঁটুলি পোকা, বিভিন্ন ধরনের রক্তচোষা পরজীবি পতঙ্গের মাধ্যমেও এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। অনেকক্ষেত্রে দেখা গেছে বাগানে ঘাস কাটার সময় সংক্রমিত প্রাণীদের বাসার সংস্পর্শে এলেও এই রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাছাড়াও দূষিত জলপান, ধুলো, নোংরার মাধ্যমেও এই রোগের জীবাণু মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। ২০০০ সালে ম্যাসাচুসেটসে টিউলারেমিয়ার প্রাদুর্ভাব ছমাস স্থায়ী ছিল, এবং ১৫টি সংক্রমণের ঘটনার মধ্যে একজনের মৃত্যুও ঘটেছিল। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের এই ব্যাকটেরিয়াটির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখে, কারণ এটিকে মার্কিন সরকার টিয়ার ১ সিলেক্ট এজেন্ট হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে, কারণ এই জৈবিক এজেন্ট জনস্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকির কারণ। প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণের ফলে এবং চিকিত্সার অভাবে এই রোগ প্রাণঘাতী হতে পারে। টিউলারেমিয়ার ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার সাধারণত ২%-এর কম, তবে উপসর্গ এবং সংক্রামক স্ট্রেনের উপর নির্ভর করে এটি মারাত্মক ক্ষতিকারকও হতে পারে। এটি একটি বিরল এবং সংক্রামক রোগ। সিডিসি-র তথ্য অনুসারে, ২০০১ থেকে ২০১০ সালের সময়কালের তুলনায় ২০১১ থেকে ২০২২-এর মধ্যে টিউলারেমিয়ার সংক্রমণ বার্ষিক গড় ৫৬% বেড়েছে। এই রোগের সাধারণ উপসর্গ হল ধুম জ্বর, মুখে বা ত্বকে ঘা, গলায় ব্যথা, চোখে জ্বালাভাব। এই সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘাস কাটা বা অন্যান্য সময় মাস্ক পরার নিদান দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাছাড়াও খরগোশ, কুকুর, ইঁদুর-অন্যান্য প্রাণীদের পরিচর্যার সময় গ্লাভস পরার নির্দেশ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
টিউলারেমিয়া নির্ণয় করা কঠিন কারণ সংক্রমণের পদ্ধতির উপর নির্ভর করে এর উপসর্গের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু সংক্রমণের সেই পথগুলো সম্পর্কে আরও সচেতনতা আমাদের এর সংস্পর্শ এড়াতে সাহায্য করতে পারে এবং চিকিত্সকদের দ্রুত রোগ শনাক্ত করতে এবং চিকিত্সা করতে সহায়তা করতে পারে।