নতুন প্রজাতির ম্যাজিক মাশরুম

নতুন প্রজাতির ম্যাজিক মাশরুম

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৬ জুলাই, ২০২৪
ম্যাজিক-মাশরুম

বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতাকে দীর্ঘকাল ধরে দুটো আলাদা জগৎ বলে মনে করা হয়েছে। কিন্তু কি হয় যখন অতীন্দ্রিয়বাদ একটি চিকিৎসা পদ্ধতির অংশ হয়ে ওঠে?

ম্যাজিক মাশরুম ব্যবহারের ইতিহাস দীর্ঘ। প্রথম দিকে কিছু আদিবাসী গোষ্ঠীর আধ্যাত্মিক কাজের মধ্যেই এই মাশরুম ব্যবহার সীমিত ছিল। তবে এখন বিনোদনমূলক ব্যবহারকারীদের কাছে এর ক্রমবর্ধমান চাহিদা, কালো বাজারকে ক্রমাগত উস্কানি দিচ্ছে। হ্যালুসিনোজেনিক পদার্থ- সাইলোসাইবিন থাকায় এই মাশরুমগুলির নাম দেওয়া হয়েছে ম্যাজিক মাশরুম। বিজ্ঞানীরা এই ম্যাজিক মাশরুমের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যে আগ্রহী। বিষণ্নতা এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যার চিকিত্সা বিকাশের আশায় মাশরুমগুলির পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কথিত আছে, আফ্রিকার লিঙ্গাকা বা নগাকা নামের স্থানীয় বসোথো নিরাময়কারী যারা আবার উইচডাক্তার নামেও পরিচিত। এনারা আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে মাশরুমগুলো চিবিয়ে খেতেন। মাঝে মাঝে রোগীর চিকিত্সার জন্যও এই মাশরুম ব্যবহার করা হত। মাশরুমের তিতকুটে স্বাদের জন্য রোগীকে, অনেক সময় চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে এগুলো দেওয়া হত। খাওয়ার পরে শুরু হত হ্যালুসিনেশন। এই অবস্থায় রোগীরা, তাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠা ছবির অবিকল বর্ণনা দিত। নিরাময়কারীরা তার ব্যাখ্যা করতেন। রোগীকে কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে, সে সম্পর্কে পরামর্শ দিতেন এই ছবি অনুসরণ করেই।

সম্প্রতি একটি গবেষণা, দক্ষিণ আফ্রিকায়, ম্যাজিক মাশরুমের দুটি নতুন প্রজাতির হদিশ দিচ্ছে, যা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন। ২০২১ সালে প্রথম তোলা হয়েছিল, দক্ষিণ আফ্রিকায় গোবর সারের উপর জন্মানো পি. মালুতি নামের মাশরুমের ছবি। মাইকোলজিস্ট ড্যানিয়েলা মুলডার, মাশরুমটির মাথার উপর ছাতার মতো সোনালী রঙের অংশটি এবং মাশরুমের আরও কিছু ছবি নিয়ে জেনেটিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠান। গবেষণায় দেখা যায় মাশরুমটি নতুন প্রজাতির। দক্ষিণ আফ্রিকা দিয়ে বেষ্টিত লেসোথো রাজ্যেও ওই একই ধরনের মাশরুম খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। আফ্রিকায় পাওয়া অপর ম্যাজিক মাশরুমের নাম দেওয়া হয়েছে পি. ইনগেলি। ২০২৩ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকার একটি উপকূলীয় প্রদেশে, এই অভিনব প্রজাতির মাশরুম বর্ষাকালের শেষের দিকে গোবর সার দিয়ে সমৃদ্ধ ঘাসে বেড়ে ওঠে। আফ্রিকায় পাওয়া সাইলোসাইবি মাশরুমের আগে চারটি প্রকারভেদ ছিল। নতুন দুই প্রজাতির আবিষ্কারে, সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় এ। গবেষণাটি মাইকোলোজিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে।