নাসা গ্রহাণুকে সফলভাবে বিচ্যুত করেছে

নাসা গ্রহাণুকে সফলভাবে বিচ্যুত করেছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৭ আগষ্ট, ২০২৪
গ্রহাণু

২০২২ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর নাসার ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেক্ট টেস্ট (DART) ডাইমরফস-এর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। ডাইমরফস হল ডিডাইমস নামে এক বড়ো গ্রহাণুকে প্রদক্ষিণকারী ছোটো চাঁদ। নাসার এই মিশনের কারণ হল সম্ভাব্য বিপজ্জনক গ্রহাণুগুলো (PHAs)র গতিপথ সফলভাবে বিচ্যুত করার কৌশল দেখা। ২০২৬ সালের অক্টোবরের মধ্যে, ESA-র হেরা মিশন ডাবল-অ্যাস্টেরয়েড সিস্টেমের সাথে মিলিত হবে আর ডাইমরফস মিশনের পরবর্তী প্রভাব জরিপ করবে যাতে ভবিষ্যতে আমাদের গ্রহ প্রতিরক্ষার জন্য এই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
এই পদ্ধতি গ্রহাণুকে সফলভাবে বিচ্যুত করতে পারে, যাতে তার থেকে পৃথিবীর কোনো ক্ষতি না হয়। কিন্তু এর থেকে যে ধ্বংসস্তূপ তৈরি হবে, তা পৃথিবী বা অন্য মহাজাগতিক বস্তুতে পৌঁছে যেতে পারে। মনুষ্যসৃষ্ট এই উল্কা পৃথিবী আর মঙ্গলে কীভাবে পৌঁছোতে পারে তা নিয়ে একদল আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী গবেষণা করছেন। তাদের গবেষণা বলছে, এক দশকের মধ্যে এই গ্রহাণুর টুকরোগুলো পৃথিবী আর মঙ্গল গ্রহে পৌঁছোবে। এই দলের গবেষণা দ্য প্ল্যানেটারি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হবে। গবেষকদের মতে এই কণাগুলির পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহে পৌঁছোনো, কণাগুলোর গতিবেগের ওপর নির্ভর করে। প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ মিটার যায় এমন নিক্ষিপ্ত কণাগুলোর মঙ্গল গ্রহে পৌঁছোতে ১৩বছর লেগে যেতে পারে। যে কণার বেগ ১.৫ কিমি/সেকেণ্ড, তারা সাত বছরের মধ্যে পৃথিবীতে পৌঁছোতে পারে। তবে গবেষকদের সিমুলেশনগুলো জানাচ্ছে পৃথিবীতে এই ইজেক্ট পর্যবেক্ষণ করতে সম্ভবত ৩০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে এই দ্রুততর কণাগুলো থেকে দৃশ্যমান উল্কা তৈরি হবেনা। পৃথিবীবাসীর জন্য সুখবর হল ডাইমরফসএর টুকরো থেকে কোনো বিপদের সম্ভাবনা নেই। ছোটো আকার আর দ্রুত বেগের জন্য তারা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বিলীন হয়ে যাবে। আর তখন আকাশে আমরা সুন্দর আলোক বর্ণালী দেখতে পাব। ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালানোর সময় মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলেও উল্কাখণ্ডের জ্বলন দেখা যাবে। এই অধ্যয়নের অনন্য দিক হল, আমাদের বায়ুমণ্ডলে ভবিষ্যতে জ্বলতে থাকা যে কোনও উল্কার সম্ভাব্য বৈশিষ্ট্যগুলো এই অধ্যয়ন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে দিকনির্দেশ, বেগ এবং বছরের কোন সময় তাদের দেখা যাবে।